সোনালি জরির পাড়, সাদা রঙের কাসাভু শাড়ি। শাড়ির দুই প্রান্ত জুড়ে মধুবনির কাজ। সঙ্গে গাঢ় লাল রঙের মানানসই ব্লাউজ়। গ্লাসহাতায় ঠাসা সোনালি জরির কাজ। কপালে ছোট্ট টিপ। গলায়-হাতে-কানে সামান্য সোনার ছোঁয়া। লাল বহিখাতা ‘ট্যাবলেট’ হাতে শনিবার বাজেট কক্ষে প্রবেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
বাজেট পেশের দিন দেশের আর্থিক পরিস্থিতির দিকে যেমন সকলের নজর থাকে, তেমনই থাকে অর্থমন্ত্রীর শাড়ির দিকে। কোনও বার তাঁর শাড়িতে প্রাধান্য পায় বাংলা, কোনও বার ওড়িশা কিংবা অন্ধ্রপ্রদেশ। তবে বাজেট পেশ করার সময়ে নির্মলা যে শাড়িই পরেন, তা দেশের কোনও না কোনও প্রান্তের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। সেই সঙ্গে সেই বছরের বাজেটে বিশেষ কী থাকছে, তার ইঙ্গিতও মেলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর শাড়িতে।
সাজে খুব একটা পরিবর্তন না হলেও এ বছর শাড়িতে প্রাধান্য পেয়েছে বিহার। সামনেই বিহারের বিধানসভা ভোট। সুতরাং, অর্থমন্ত্রীর শাড়ি যে তেমন কিছুর ইঙ্গিত দেবে, এ আর নতুন কী? কেরলের ঐতিহ্যবাহী কাসাভু শাড়ির কথা প্রায় সকলেই জানেন। যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানে দক্ষিণীদের এই শাড়ি পরতে দেখা যায়। তার উপরে রয়েছে বিহারের মধুবনি জেলার বিখ্যাত মধুবনি পেন্টিং। অর্থমন্ত্রীর শাড়ির পাড় বরাবর রয়েছে জোড়া মাছের নকশা, ফুল- লতাপাতার কল্কা।
বিহারের মধুবনি জেলার ‘মিথিলা আর্ট ইনস্টিটিউট’ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন নির্মলা। সেই সময়ে এই শাড়িটি নির্মলাকে উপহার দিয়েছিলেন মধুবনি শিল্পী দুলারি দেবী। নিরলস পরিশ্রম এবং প্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত মধুবনী শিল্পকে স্বীকৃতি দিতে ২০২১ সালে পদ্ম পুরস্কারে ভূষিত হন দুলারি দেবী। তাঁর হাতে আঁকা সেই শাড়িটি পরেই এ বছর বাজেট পেশ করছেন নির্মলা। ধীবর সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা দুলারি তাঁর আঁকার মাধ্যমে সেই সমাজের কথাই তুলে ধরেছেন।

বাজেট পেশ করার আগে কক্ষের সামনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই
শনিবার অর্থমন্ত্রী হিসাবে সংসদে অষ্টম বার বাজেট পেশ করছেন নির্মলা। নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করতে চলেছে তাঁর সরকার। গত বছর তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। তার পর থেকে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার সংসদে বাজেট পেশ করবেন নির্মলা।