মদ্যপানের আসক্তি কাটবে কী করে? ছবি: নিজস্ব চিত্র।
সামনে বড়দিন, তার পরেই ইংরেজি নববর্ষ। পার্টির মরসুম ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্লাসে গ্লাসে ‘উল্লাস’! কিন্তু সব ‘উল্লাস’ কী আনন্দবহ হয়? কারও কারও হাতে গ্লাস উঠছে দেখলেই আশপাশের মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন। মানুষটা মদ্যপান করে নিলে আর যেন আগের মতো থাকেন না। পুরো মানুষটাই যান বদলে। বদলে যায় আচরণ, বদলে যায় ভাষা। বাড়ির লোকেদেরও বিরাট ভয়, আবার যদি ছেলেটা মদ খেয়ে বাড়ি ফেরে! সেই অশান্তি, সেই চিৎকার— পাড়ার লোকেদের কাছেও লজ্জায় মুখ দেখানো দায় হয়ে যায়। মদ্যপান মানেই মাতলামি নয়, কিন্তু কখন সেই অভ্যাসে যে লাগাম টানতে হবে, তা ভুলে গেলেও মুশকিল!
এ সব নিয়েই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনায় বসলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই সপ্তাহের বিষয় ছিল ‘মদ খেলে হুঁশ থাকে না!’
অনেক মানুষ আছেন যাঁরা জানেন যে মদ্যপান করলেই তাঁরা আর নিজের বশে থাকেন না, এমন অনেক কাজ করে বসেন যা মোটেও কাম্য না। বারং বার মনে মনে মদ ছাড়ার পরিকল্পনা করলেও সামনে কাউকে মদ্যপান করতে দেখলেই মনের উপর আর নিয়ন্ত্রণ থাকে না! প্রথমে এক গ্লাস থেকে শুরু করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গ্লাসের পর গ্লাস সাবাড় করে দিলেও হুঁশ থাকে না।
প্রতি পর্বের আগেই অনুত্তমার কাছে পাঠানো যায় প্রশ্ন। এই পর্বেও ই-মেলে তেমন কিছু প্রশ্ন পেয়েছিলেন মনোবিদ। অনুত্তমা একা নন, এ দিনের আলোচলায় তাঁর সঙ্গী ছিলেন মনোরোগ চিকিৎসক সত্যজিৎ আশ।
আলোচনার শুরুতেই অনুত্তমার প্রশ্ন চিকিৎসককে, মদ্যপান যে আসক্তিতে পরিণত হচ্ছে, তা বোঝার উপায় কী? চিকিৎসক সত্যজিৎ আশ বললেন, ‘‘সামাজিক পরিসরে মাঝেমধ্যে মদ্যপান করেন অনেকেই। তবে কতটা মদ্যপান করলে স্বাস্থ্যহানি হবে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। একশো জন মদ খেলে সবার তো সমস্যা হয় না। কেউ মদ্যপান করার পর হুঁশ রাখতে না পেরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন, কারও আবার গ্যাসট্রিকের সমস্যা বা বমি বমি ভাব হচ্ছে, কারও কারও আবার মদ খাওয়ার পর মনের উপর লাগাম থাকছে না। এই সব ক্ষেত্রে কিন্তু সতর্ক থাকার প্রয়োজন আছে।’’
এ নিয়ে নানা প্রশ্নও এসেছে। যেমন দেবলীনা লিখেছেন, ‘‘আমি নিয়মিত অ্যালকোহল খাই না। মাঝেমধ্যে হুইস্কি কিংবা রেড ওয়াইন খাই। তবে বিশ্বকাপ দেখতে দেখতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার মেজাজে নিয়মিত অ্যালকোহলে চুমুক দিতে শুরু করি। এখন খেলা দেখার সময়ে হাতে গ্লাসটি না থাকলে কিসের একটা অভাব বোধ করছি। বোধ হয় নেশার ফাঁদে পড়ছি, পড়াশোনারও ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও বেরোতে পাচ্ছি না!’’
শুরুতেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘‘জল তেষ্টা, খিদে পাওয়ার বিষয়টি যেমন আমাদের হাত থাকে না, কোনও বিশেষ সময়ে মদ্যপানের ইচ্ছা করাটাও কিন্তু সেই রকম। প্রথম থেকেই ইচ্ছার উপরে নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পারলে সেটা হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে সময় নেবে না। যখন দেখছেন মদ্যপানের পর আপনার আচরণে বদল ঘটছে, তখন সাবধান হতে হবে। সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হওয়া বা কাউকে চিনতে না পারার সমস্যা দেখা দিলে কিন্তু নিজের উপর লাগাম টানতে হবে। বুঝতে হবে, এগুলি গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy