—প্রতীকী ছবি।
পাস্তা, স্প্যাগেটি— এই দুটি পদ ইটালির হলেও প্রায় সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়। স্কুল থেকে ফিরে রান্না করে রাখা সেই পাস্তা গরম করে খেতে গিয়েই ঘটেছিল বিপত্তি। এক বাটি পাস্তা খেয়েই প্রাণ হারাতে হয়েছিল বছর ২০-র ব্রাসেল্সের এক তরুণকে। যদিও ঘটনাটি ২০০৮ সালের। ‘ফ্রায়েড রাইস সিনড্রোম’-এর কারণে সেই মৃত্যুর ঘটনা আবার সকলের নজরে এসেছে সমাজমাধ্যমের দৌলতে।
স্কুল থেকে ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যাওয়ার আগে রান্না করে রাখা পাস্তা মাইক্রোঅয়েভ অভেনে গরম করে খেয়েছিলেন ওই তরুণ। বাড়ির সামনেই পার্কে বন্ধুদের সঙ্গে খেলায় মেতে উঠেছিল। কিন্তু আধ ঘণ্টা পর থেকেই ওই তরুণের শরীরে নানা রকম অস্বস্তি হতে শুরু করে। মাথা ঘোরা থেকে বমি, পেট ব্যথা ক্রমশ ভয়ঙ্কর রূপ নিতে শুরু করে। বিপদ বুঝে কিছু ক্ষণের মধ্যেই তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। বমি, পেটব্যথার সঙ্গে রাতের দিকে শুরু হয় জলের মতো পায়খানা। শরীর থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় জল বেরিয়ে যাওয়ায় ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিনি। পরের দিন সকালে যখন তাঁর অভিভাবক ঘটনার কথা জানতে পারেন, তত ক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। তদন্তের পর জানা গিয়েছিল, দিন পাঁচেক আগে রান্না করা ওই পাস্তাটি পড়ে ছিল হেঁশেলের স্বাভাবিক তাপমাত্রায়। তার পর আবার তা গ্যাসে ফোটানোর বদলে গরম করা হয়েছিল মাইক্রোঅয়েভে।
অস্বাভাবিক কারণে মৃত্যুর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই পাস্তা খাওয়ার ঘণ্টা দশেক পর অর্থাৎ ভোর ৪টে নাগাদ মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণের। মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে বিষক্রিয়ার কথা। সম্ভবত, দিন পাঁচেকের উপর ফেলে রাখা খাবারে উৎপন্ন হওয়া ব্যাক্টেরিয়াই এই বিষক্রিয়ার কারণ। এ ছাড়াও ওই ছাত্রের লিভারে সেন্ট্রিবুলার নেক্রোসিসের মতো লক্ষণও দেখা গিয়েছিল। যার ফলে শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। ‘জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়েলজি’-তে প্রকাশিত হয়েছে তথ্যটি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শুধু ময়দাজাত খাবার নয়, মাছ, মাংস, সস, স্যুপ, ভাত, আলু এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকেও বিপত্তির সম্ভাবনা রয়েছে। এই ধরনের খাবার রান্না করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই খেয়ে নেওয়া উচিত। যদি তা না-ও হয়, তা সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করে ফ্রিজে রাখতে হয়। এ ক্ষেত্রে দুইয়ের কোনওটিই ঘটেনি। পাঁচ দিন ধরে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় থাকার ফলে খাবারের মধ্যে ব্যাক্টেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল বলেই আশঙ্কা করা যায়। চিকিৎসা পরিভাষায় এই ব্যাক্টেরিয়াজাত সংক্রমণটিই ‘ফ্রায়েড রাইস সিনড্রোম’ বলে পরিচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy