ফিরোজাবাদে ভোটের প্রচারে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। ছবি— পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশের লড়াইয়ে নারীশক্তিকে তুরুপের তাস করে ভোটে ঝাঁপাতে চাইছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। আর সেই কাজে ‘দাদি’-র উদাহরণকেও সামনে নিয়ে আসছেন তিনি। ওমিক্রন সংক্রমণের কারণে উত্তরপ্রদেশের মানুষের কাছে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে আজ প্রচার শুরু করলেন কংগ্রেসের এই দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। আর প্রথম দিনেই এই নারীশক্তির কথা তুলে ধরতে দেখা গেল তাঁকে। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও পাক খেয়েছে নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর আসন্ন প্রতিশ্রুতিগুলিকে কেন্দ্র করে।
প্রিয়ঙ্কার কথায়, “উত্তরপ্রদেশের গ্রামে গ্রামে নিগৃহীত নারীদের বাড়ি ঘুরেছি আমি। দেখেছি কী প্রবল নিগ্রহ, অত্যাচার, বঞ্চনা তাঁরা সহ্য করেন। প্রশাসন, পুলিশ, শাসক দল নিগৃহীত নারীদের কথা না শুনে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে, নির্যাতিতার পরিবারকে দোষারোপ করছে। উত্তরপ্রদেশের নারীদের এই পরিস্থিতি আমার রাজনীতির উপর বিরাট প্রভাব ফেলেছে।” কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারে রাজ্যের নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংরক্ষণ, সরকারি সুযোগসুবিধার অঙ্গীকার রয়েছে।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, প্রিয়ঙ্কার ‘লড়কি হুঁ লড় সকতি হুঁ’ স্লোগান রাজ্যের মাঠেঘাটে ও গ্রামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পর কিছুটা নড়ে বসতে দেখা গিয়েছে বিজেপি, এসপি-র মতো দলগুলিকেও। তারাও মেয়েদের নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করতে শুরু করেছে। বিষয়টিকে সাফল্য হিসাবেই দেখছেন প্রিয়ঙ্কা। তাঁর কথায়, “হঠাৎ করেই দেখছি সবাই নারীকল্যাণ নিয়ে কথা বলছেন। এসপি, বিজেপি-র মতো দলও বিভিন্ন পরিকল্পনা ঘোষণা করতে শুরু করেছে। এটা আমার কৃতিত্ব নয়, নারীদেরই কৃতিত্ব। একটা গ্যাস সিলিন্ডার দিয়েই যে সমাজের বঞ্চিত নারীদের প্রতি কর্তব্য সমাধা হয়ে যায় না সেটা বুঝতে হবে এই সব রাজনৈতিক দলগুলিকে।” তাঁর বক্তব্য, “উত্তরপ্রদেশের ভোটের পর মহিলাদের এই স্লোগান নিয়ে আমি দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যে যাব।”
‘দাদি’ অর্থাৎ প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী যে তাঁর অনুপ্রেরণা তা আজ বারবার বলেছেন প্রিয়ঙ্কা। স্মৃতিচারণ করেছেন তাঁর শৈশবের স্মৃতির। তাঁর কথায়, “ওঁর কোনও ভয়ডর ছিল না। একবার ওড়িশায় গিয়েছেন জনরোষের মধ্যে বক্তৃতা দিতে। মঞ্চে পাথর ছোড়া হচ্ছে। নাকে পাথর এসে লেগেছে, কিন্তু উনি বক্তৃতা শেষ না করে নড়েননি। রক্ত পড়ছে, তার মধ্যেই বলেছেন, এই সব গুন্ডামি কিছুতেই বরদাস্ত করব না। হিম্মত থাকলে সামনে এসে কথা বলুন। ধৈর্য, সাহস, বীরত্বের প্রতীক ছিলেন ইন্দিরা গাঁধী। তিনি আমার অনুপ্রেরণা।” দাদির ‘আয়রন লেডি’ চরিত্রের আড়ালে যে মমতাময়ী রূপ ছিল, আজ গল্পের ছলে সে কথাও বলেন প্রিয়ঙ্কা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বারো বছর একবাড়িতে থেকেছি ওঁর মৃত্যু পর্যন্ত। কত হাসি-খেলা। দরজার পিছনে লুকিয়ে আমাদের ভয়ও দেখাতেন।’’
বিজেপি নেতৃত্বকে আক্রমণ করে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, “আমরা চাই রাজ্যের প্রকৃত অর্থে উন্নয়ন হোক। যেখানে বিমানবন্দর নেই, তার উদ্বোধন করা হচ্ছে! চিনের বিমানবন্দরকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারতের বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি সরকার ঘৃণা আর হিংসার সাহায্য কেন নিচ্ছে জানেন তো? কারণ, তারা চায় আসল প্রশ্নের মুখে যেন না পড়তে হয়। ওরা ধর্ম, জাতি এবং ঘৃণার প্রচার করে ভোট চায়, কাজ করে নয়।” আজ পরে সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মন্তব্য, “প্রিয়ঙ্কাজি যে ভাবে মানুষের মনের কথা বলে প্রচার করছেন, তাতে এটা স্পষ্ট কংগ্রেসকে ছাড়া উত্তরপ্রদেশে কোনও সরকার হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy