Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
WAQF Amendment Bill

মেরুকরণের লক্ষ্য ওয়াকফ বিল, মত বিরোধীদের

১৯৫৪ সালে প্রথম ওয়াকফ আইন পাশ হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইনে সংশোধনী এনে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে সব ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকে বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার নিয়ে বিতর্ক শুরু।

Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১০
Share: Save:

লোকসভায় আগামিকাল ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ হওয়ার কথা। তার পরেই তা সংখ্যালঘু মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হবে বলে সূত্রের খবর। যদিও ওই বিল মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, ওই যুক্তি দেখিয়ে আগামিকাল বিল পেশের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বিরোধীরা।

বিরোধী শিবির মনে করছে, হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দিতে ওই বিতর্কিত বিল পেশের পরিকল্পনা। আরএসপি সাংসদ এন কে প্রেমচন্দ্রনের মতে, ‘‘সামনেই হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্র নির্বাচন। সেই ভোটের কথা ভেবে মেরুকরণের লক্ষ্যে বিলটি আনা হচ্ছে।’’ যদিও কেন্দ্রের যুক্তি, মুসলিম সমাজের গরিব, মহিলাদের তরফে ওয়াকফ আইন সংস্কারের দাবি জানানো হচ্ছিল। তবে মুসলিম সংগঠনগুলির মতে, ওয়াকফ বোর্ডের বিতর্কিত জায়গাগুলি বিভিন্ন শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হওয়ায় সে গুলি দখলের উদ্দেশ্যেই ওই বিল। ওই সংশোধনী মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে সরব হয়েছে কংগ্রেস। আর তৃণমূলের বক্তব্য, আগে বিল সংসদে নিয়ে আসুক সরকার। তারপর মন্তব্য করবে দল।

১৯৫৪ সালে প্রথম ওয়াকফ আইন পাশ হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইনে সংশোধনী এনে ওয়াকফ বোর্ডের হাতে সব ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়। তারপর থেকে বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার নিয়ে বিতর্ক শুরু। সরকারের যুক্তি, বিষয়টিতে স্বচ্ছতা আনতে চলতি বিলে ৪৪টি সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে ওয়াকফ আইনের ধারা ৪০ অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ডের যে কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণার অধিকার ছিল। ফলে বহু গরিব মুসলিমের সম্পত্তি, অন্য ধর্মালম্বীদের ব্যক্তির সম্পত্তি অধিগ্রহণের অভিযোগ ওঠে ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে। সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডের সেই একচ্ছত্র অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জেলাশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনও আধিকারিককে দেওয়া হচ্ছে।

ওয়াকফ সংশোধনী অনুয়ায়ী, ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হবেন পদাধিকার বলে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী। পাশাপাশি, কাউন্সিলে দু’জন অ-মুসলিম থাকা যেমন বাধ্যতামূলক, তেমনি কাউন্সিলের দু’জন সদস্যকে মহিলা হতে হবে। পাশাপাশি, রাজ্যগুলিতে যে ওয়াকফ বোর্ড গঠন হবে, তা শিয়া ওয়াকফ বোর্ড হলে তাতে সব সদস্য শিয়া হবেন। তেমনি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড হলে তাতে কেবল সুন্নিরাই থাকবেন।

জামাত-ই ইসলামি হিন্দ সংগঠনের মতে, সেনা ও রেলের পরে দেশে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডের হাতে। জামাত-ই-ইসলামি হিন্দ সংস্থার সহসচিব ইনআমুরহমান খানের মতে, সরকার দীর্ঘ সময় ধরেই দিল্লি-সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াকফ সম্পত্তি দখলে তৎপর। সেই কারণেই বিল আনা হচ্ছে। হায়দরাবাদের এমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসির মতে, ওয়াকফ সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে গেরুয়া-শিবির। এ ছাড়া, সংশোধনীতে কোনও সম্পত্তি নিয়ে বিতর্ক হলে তা সমীক্ষার অধিকার দেওয়া হয়েছে জেলাশাসককে। কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে ঘোষণার তিন মাসের মধ্যে সমীক্ষার আবেদন জানাতে হবে। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যাঁরা মুসলিম ধর্মাবলম্বী, তাঁদের সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে দান করা যাবে। সংশোধনী বিল পাশের আগে বা পরে কোনও সরকারি সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা করা হলে বা হয়ে থাকলে সেই দাবি আর গ্রাহ্য হবে না। এ নিয়ে বিতর্ক হলে তা খতিয়ে দেখবেন জেলাশাসক।

অন্য বিষয়গুলি:

Waqf Board parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy