রাজ্যসভার সদস্য়রা বিশেষ উল্লেখ পর্বে শুভেচ্ছা জানান অস্কারজয়ী শিল্পী, কলাকুশলীদের। — ফাইল ছবি।
৯৫তম অস্কারের মঞ্চে ভারতের জয়জয়কার। মৌলিক সঙ্গীত বিভাগে সেরা হয়েছে ‘আরআরআর’ ছবির গান ‘নাটু নাটু’। সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র নির্বাচিত কার্তিকী গনসালভেস পরিচালিত ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’। তা নিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যসভায় বিশেষ উল্লেখ পর্বে শিল্পীদের শুভেচ্ছা জানানো হয়। সব দেখেশুনে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় জানালেন, তাঁর ‘মন কি বাত’। বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জানালেন, আইনজীবী না হলে নিশ্চিত ভাবে অভিনয়ই করতেন তিনি। যা শুনে হাসির ছর্রা সংসদের উচ্চকক্ষে।
মঙ্গলবার রাজ্যসভায় ভারতের অস্কার জয়ের কথা প্রথম তোলেন এমডিএমকের সাংসদ ভাইকো। তিনি বলেন, ‘‘এই নিয়ে তামিলনাড়ুতে দ্বিতীয় অস্কার এল। ২০০৯ সালে এআর রহমান জিতেছিলেন।’’ তার পরেই ধনখড় বলেন, ‘‘আমি যদি আইনজীবী না হতাম, তা হলে নিশ্চিত ভাবে অভিনয় করতাম।’’ ধনখড়ের মুখে এ কথা শুনে হাসতে শুরু করেন শাসক বিরোধী সাংসদেরা। কংগ্রেসের এক সাংসদের টিপ্পনী, ‘‘যদি সত্যি তাই হত, তা হলে আজ আমরা যে ভাবে তাঁদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, আপনার ক্ষেত্রেও তা-ই করতাম।’’ এ কথা শুনে মুচকি হেসে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘এই অর্জনগুলি আসলে বিপুল প্রতিভা, সৃষ্টিশীলতা এবং ভারতীয় শিল্পীদের চূড়ান্ত দায়বদ্ধতার বিশ্বমঞ্চে স্বীকৃতির প্রতিফলন। বিশ্বব্যাপী ভারতের উত্তরণের এটাও একটা স্বরূপ।’’ এই সময়ই রাজ্যসভায় কৃতী শিল্পীদের শুভেচ্ছা জানানোর পর্বে কংগ্রেস সভাপতি তথা বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে জোড়া অস্কার জয়ের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আমরা মোদীজিকে অনুরোধ করছি, দয়া করে ওঁদের জয়ের কৃতিত্ব আপনি নেওয়ার চেষ্টা করবেন না।’’
Oscar winning 'RRR' and The Elephant Whisperes' are India's contributions to the world.
— Congress (@INCIndia) March 14, 2023
We request Modi ji not to take the credit for their win.
:Congress President and LoP in Rajya Sabha Shri @kharge pic.twitter.com/43loVpofCF
আইনজীবী না হলে তিনি অভিনয় জগতে আসতেন বলে জানিয়েছেন ধনখড়। কিন্তু তিনি কি মঞ্চাভিনয়ের দিকে ঝুঁকতেন, না কি সিনেমায় নামতেন, তা স্পষ্ট করেননি। যদিও ক্যামেরার প্রতি তাঁর ‘দুর্বলতা’র নজির আগেও প্রকাশ্যে এসেছে। তখন তিনি বাংলার রাজ্যপাল। রাজ্য সরকার যে দুর্গাপুজো কার্নিভালের আয়োজন করে, ২০১৯-এ সেই অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। তিনি গিয়েছিলেনও। কিন্তু টিভিতে তাঁকে দেখানো হয়নি বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন ধনখড়। অনুষ্ঠানের দিন চারেক পর রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘আমি চার ঘণ্টারও বেশি সেখানে ছিলাম। কিন্তু আমাকে দেখাতেই দেওয়া হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ হল সংস্কৃতির পীঠস্থান। সেখানে এক জন সাংবিধানিক পদাধিকারীকে যে ভাবে অপমান করা হল, তাতে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিকেই অপমান করা হল। এটা শুধু আমার অপমান নয়, এটা পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটা মানুষের অপমান।’’
তাঁকে যে ভাবে ‘ব্ল্যাক আউট’ করা হয়েছে, তা ‘জরুরি অবস্থার কথা মনে করিয়ে দেয়’ বলেও তৎকালীন রাজ্যপাল মন্তব্য করেছিলেন। এখানেই শেষ নয়, ২০২১-এ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ধনখড়। সেই পর্বে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘‘আমি দু’বার বিধানসভায় গিয়ে ভাষণ দিয়েছি। দু’বারই আমার জরুরি অবস্থার কথা মনে পড়ে গিয়েছে। কারণ দু’বারই আমার ভাষণ ব্ল্যাকআউট করা হয়।’’ বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপালই এখন দেশের উপরাষ্ট্রপতি। সেই ক্ষমতাবলেই তিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান।
সোমবার থেকে সংসদে শুরু হয়েছে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব। সোমবার কাজ হয়নি। মঙ্গলবারও শাসক, বিরোধী হইহট্টগোলে সভার কাজ বার বার পণ্ড হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ধনখড়ের মন্তব্যে হাসিতে ফেটে পড়েন সকলে। সংসদের গুরুগম্ভীর পরিবেশে লাগে টাটকা বাতাস। যদিও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই আবার হট্টগোল শুরু হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy