বিজেপির পরবর্তী সভাপতির নাম চূড়ান্ত হওয়ার আগেই, রাজধানীর অলিন্দে নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার রদবদলের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গেল। সূত্রের মতে, দলের সম্ভাব্য সভাপতি হিসেবে কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবছেন নরেন্দ্র মোদীরা। দৌড়ে নাম উঠে এসেছে বিদ্যুৎ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের। সে ক্ষেত্রে নতুন কোনও মুখকে তাঁর পরিবর্তে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হয়েছে। যে কারণে ওই রদবদল অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে বলেই জানিয়েছে দলের একটি সূত্র। তবে সভাপতি নির্বাচন ও মন্ত্রিসভার রদবদল কবে হবে— তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না দলের কোনও নেতাই।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে বিক্ষোভে নেমেছে বিরোধী দল ও মুসলিম সংগঠনগুলি। সরকারের দাবি, মুসলিমদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ওই আইন করা হয়েছে। বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, সরকার যদি সত্যিই মুসলিমদের উন্নয়নে আন্তরিক হয়ে থাকে, তাহলে কেন একজন মুসলিম রাজনীতিককে মোদী মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি? ওই যুক্তি অনেকাংশেই যে ঠিক তা মেনে নিয়ে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সংখ্যালঘু সমাজের ব্যক্তিকে নিয়ে আসার কথা ভাবছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। আর তা হলে মুখতার আব্বাস নকভির পরে ফের কোনও মুসলিম নেতা মোদী মন্ত্রিসভায় জায়গা নিতে চলেছেন। সূত্রের মতে, সংখ্যালঘু মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন বিজেপির নেতা ও রাজ্যসভার মনোনীত সাংসদ গুলাম আলি খটানা। এ ছাড়াও দৌড়ে রয়েছেন জামাল সিদ্দিকি। জামাল বর্তমানে বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি। কিন্তু তাঁকে প্রতিমন্ত্রী করা হলে সে ক্ষেত্রে কোনও রাজ্য থেকে সাংসদ হিসেবে জিতিয়ে আনতে হবে দলকে।
চলতি মাসেই দলের সভাপতি বেছে নেওয়ার কাজ সেরে ফেলার পক্ষপাতী বিজেপি। কিন্তু গতকাল দলের বর্তমান সভাপতি জেপি নড্ডার বাড়িতে অমিত শাহ ও রাজনাথ সিংহের দীর্ঘ বৈঠক, প্রায় একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ, প্রতি বুধবার হওয়া মন্ত্রিসভার বৈঠক বাতিল করে দেওয়া ছাড়াও সপ্তাহান্তে নরেন্দ্র মোদীর জম্মু-কাশ্মীর সফর বাতিল করে দেওয়া মন্ত্রিসভার রদবদলকে নতুন করে হাওয়া দিয়েছে। বিজেপি সূত্রের মতে, শেষ পর্যন্ত সম্ভবত দলের সভাপতি হিসেবে বাজিমাৎ করতে চলেছেন মনোহরলাল খট্টরই। হরিয়ানার প্রাক্তন ওই মুখ্যমন্ত্রী দলে মোদী ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। খট্টর ও মোদী আরএসএসের প্রচারক হিসেবে দীর্ঘ সময় এক সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রচারের কাজে সাইকেল ও বাইকে করে ঘুরে বেড়াতেন দু’জনে।
খট্টর আরএসএসের ঘনিষ্ঠ। তিনি দলের সভাপতি হলে আরএসএসের আপত্তি থাকার কথা নয়। তেমনই খট্টরের মাধ্যমে দলের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হবেন মোদীও। তাই অনেকের মতে, খট্টর দলের সভাপতি হলে সে ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে নতুন কোনও মুখকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)