Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
paresh baruah

চুক্তি নিয়ে ‘লজ্জিত’ আলফা স্বাধীন নেতা

চুক্তি স্বাক্ষরের পরে রবিবারই আলোচনাপন্থী আলফা নেতারা অসমে আসেন। বিপুল ভাবে স্বাগত জানিয়ে তাঁদের বরঝাড় বিমানবন্দর থেকে শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

paresh baruah

আলফা স্বাধীনের প্রধান পরেশ বরুয়া। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৬
Share: Save:

কেন্দ্র-রাজ্য ও আলফার মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তি নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন সন্তোষ জানালেও সমালোচনায় সরব হয়েছে কয়েকটি শিবির। চুক্তির ফলে আদৌ কী লাভ হবে, এ নিয়েও ধন্দে অনেকে। আলফা স্বাধীনের প্রধান পরেশ বরুয়া এই চুক্তিকে অর্থহীন, হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ক্ষুব্ধ নই, লজ্জাবোধ করছি। আলফার চুক্তিতে সার্বভৌমত্বের কথা নেই, এ বড় বিস্ময়কর। সিএএ নিয়ে কোনও উল্লেখই নেই। আলফার নিজস্ব সংবিধান, পতাকা কিছুই দাবি করা হল না।’’ কেন হল না, তিনি নিজেই এর জবাব দেন। বলেন, ‘‘নীতি-আদর্শ ত্যাগ করে আলোচনায় বসলে রাজনৈতিক সমাধান এমনই হয়।’’ তবে তিনিও যে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার সঙ্গে কথা বলছেন, তা আজ জানিয়েছেন পরেশ। অন্য দিকে আজ আলোচনাপন্থী আলফা নেতাদের অসমে সং‌বর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

তবে চুক্তি স্বাক্ষরের পরে রবিবারই আলোচনাপন্থী আলফা নেতারা অসমে আসেন। বিপুল ভাবে স্বাগত জানিয়ে তাঁদের বরঝাড় বিমানবন্দর থেকে শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোট-বড় ১০৭টি সংগঠন সেখানে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে অরবিন্দ রাজখোয়া, অনুপ চেতিয়া, শশধর চৌধুরিরা চুক্তির সমালোচকদের জবাব দেন। কারও নাম উল্লেখ না করেই চেতিয়া সার্বভৌমত্ব ইস্যুতে নানা মন্তব্যে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন, চুক্তি করবেন, আবার সার্বভৌমত্বের কথা বলবেন, এ হয় কোনওদিন? ভারত সরকার সার্বভৌমত্ব দিয়ে দেবে, এটাও কেউ আশা করতে পারেন কি?’’ তিনি পরেশ বরুয়াকে আলোচনায় বসানোর জন্য ভারত সরকারের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন।

একই আহ্বান জানিয়েছেন অসম বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈমারিও। তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনও বিষয় নেই যে, কেন্দ্র-রাজ্য একযোগে আলোচনায় বসলে সমাধান হবে না। তাই পরেশ বরুয়া এসে আলোচনায় বসলে তাঁর কথা গুরুত্ব পাবে, নানা বিষয়ের নিষ্পত্তি হবে।’’ আলফার সভাপতি অরবিন্দ রাজখোয়া খুশি যে, অসমের অখণ্ডতা নিশ্চিত করা গিয়েছে এই চুক্তিতে। ভূমিপুত্রদের রাজনৈতিক অধিকারও সুনিশ্চিত হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নে কেন্দ্রের কমিশন গঠনের ঘোষণায়ও তিনি আশ্বস্ত বোধ করছেন।

কিন্তু বিশিষ্ট জন হীরেন গোঁহাই এই চুক্তিকে আত্মসমর্পণের দলিল বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আলফার শীর্ষ নেতৃত্বের রাজনৈতিক অপরিপক্কতার প্রমাণ মিলল। এটি বিজেপির কর্মসূচি অনুসারে তৈরি হয়েছে। কখনও কখনও মনে হয়, এটি হিমন্তবিশ্ব শর্মা তৈরি করেছেন।’’ অসম জাতীয় পরিষদের সভাপতি লুরিনজ্যোতি গগৈর প্রশ্ন, ‘‘পরেশ বরুয়াকে বাদ দিয়ে আলফার চুক্তি কতটা আর শান্তি ফেরাবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আলফা নেতাদের ব্যবহার করে আগামী লোকসভা নির্বাচন উতরে যেতে চাইছেন হিমন্তবিশ্ব।’’ একে ‘দুর্বল চুক্তি’ বলে উল্লেখ করে রাইজ়র দলের নেতা, বিধায়ক অখিল গগৈ বলেন, ‘‘স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা আলফা নেতারা তাতে সই করা দুর্ভাগ্যজনক।’’

তবে আলফা স্বাধীনও যে শীঘ্রই আলোচনায় বসতে চলেছে, পরেশের বক্তব্যেই এর ইঙ্গিত মেলে। তিনি আজ গোপন শিবির থেকে সংবাদমাধ্যমকে খোলামেলা ভাবেই জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

paresh baruah ULFA Assam ULFA-I
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE