গত বছরের ১৫ অগস্ট তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পরেই ভারত তাদের দূতাবাস বন্ধ করে কূটনীতিকদের দেশে ফেরত নিয়ে আসে। তবে সে দেশে মানবিক সাহায্য পৌঁছনোর জন্য তালিবান কর্তাদের সঙ্গে ন্যূনতম যোগাযোগ বজায় রাখছে সাউথ ব্লক।
ফাইল ছবি
ভারতের সঙ্গে কূটনতিক সম্পর্ক স্থাপনে উৎসাহী তালিবান, কূটনৈতিক সূত্রে এমন খবরই পাওয়া গিয়েছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জে তালিবানের প্রতিনিধি সুহেল শাহিন যা বলেছেন, তার থেকে স্পষ্ট, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের বেহাল অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে শুধু ভারত নয়, একে একে এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়তে সক্রিয় হবে বর্তমান আফগানিস্তান সরকার।
সুহেলের কথায়, ‘‘কাবুল ভারতীয় কূটনীতিক এবং দূতাবাসের জন্য ‘নিরাপদ পরিবেশ’ তৈরি করত প্রস্তুত।’’ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে পোক্ত করতে ‘কূটনৈতিক উপস্থিতি প্রয়োজন’ বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমরা চাই ভারত-সহ সমস্ত দেশ কাবুলে তাদের দূতাবাস আবার খুলুক। আবার স্বাভাবিক ভাবে তারা কাজ শুরু করুক। তাদের কাজকর্মের জন্য আমরা নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রস্তুত। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য কূটনৈতিক উপস্থিতি প্রয়োজন।”
গত বছরের ১৫ অগস্ট তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পরেই ভারত তাদের দূতাবাস বন্ধ করে কূটনীতিকদের দেশে ফেরত নিয়ে আসে। তবে সে দেশে মানবিক সাহায্য পৌঁছনোর জন্য তালিবান কর্তাদের সঙ্গে ন্যূনতম যোগাযোগ বজায় রাখছে সাউথ ব্লক। এখনও পর্যন্ত ৮ হাজার মেট্রিক টন গম আফগানিস্তানে পাঠানো হয়েছে পাকিস্তানের ওয়াগা সীমান্তের মাধ্যমে। মোট ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম পাঠানোর লক্ষ্য রয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, ২০০৭-এর পর এই প্রথম পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করতে দিল ভারত থেকে আফগানিস্তানে পণ্য পৌঁছনোর কাজে।
বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, তালিবানের এই সক্রিয়তার পিছনে ইসলামাবাদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নয়াদিল্লির কাছে খবর, আফগানিস্তানের তালিবান সরকার যাতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়, তার জন্য কয়েক মাস ধরেই ময়দানে নেমেছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি আফগানিস্তানের পূর্বতন সরকারের সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছে তারা। তবে ভারতের দূতাবাস সে দেশে খোলার পিছনে পাকিস্তানের কী স্বার্থ থাকতে পারে, বা আদৌ কোনও স্বার্থ থাকতে পারে কি না, তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা চলছে নয়াদিল্লিতে।
তবে তালিবান যতই উদ্যোগী হোক না কেন, সাউথ ব্লকের বক্তব্য, আফগানিস্তানের মানুষের পাশে দাঁড়ানো এক কথা। আর তালিবানকে তাদের শর্তে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া অন্য। নরেন্দ্র মোদী সরকার গোড়া থেকেই স্পষ্ট করেছে, আফগানিস্তানের সমস্ত উপজাতি, সম্প্রদায় এবং দেশের সমস্ত রাজনৈতিক শক্তির প্রতিনিধিত্ব থাকবে, এমন সরকার গঠন না করা হলে সে দেশে শান্তি এবং সুস্থিতি ফেরা অসম্ভব। পাশাপাশি ভারতের শর্ত, আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করে কোনও জঙ্গি সংগঠন যেন ভারতে সন্ত্রাস পাচার না করে। আফগানিস্তানকে যেন সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ স্বর্গোদ্যান বানানো না হয়। এখনও পর্যন্ত এই শর্তগুলি মানার কোনও লক্ষণ দেখায়নি তালিবান। ফলে কাবুলে দূতাবাস ফের খোলার এখনই কোনও প্রশ্ন উঠছে না বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy