লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই সংসদ চত্বরের নিরাপত্তার ভার সিআইএসএফের হাতে চলে গেল। কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী বা সিআইএসএফ দেশের সব বিমানবন্দর থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে কেন সংসদের নিরাপত্তার ভার তুলে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে সাংসদদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের প্রশ্ন, ‘‘সংসদ কি কোনও শিল্প? তা হলে শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীকে নিয়োগ করা হচ্ছে কেন? না কি এটা মোদী-শাহের সংসদ নিয়ন্ত্রণ করার নতুন চেষ্টা?”
এত দিন পার্লামেন্ট সিকিয়োরিটি সার্ভিস বা পিএসএস এবং দিল্লি পুলিশ সংসদ ভবনের ভিতরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল। ১৯৫০ সাল থেকেই এই বাহিনী সংসদের নিরাপত্তা দায়িত্বে। তার আগে এই বাহিনীর নাম ছিল ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড স্টাফ’।
ব্রিটিশ জমানায় সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলিতে ভগৎ সিংহের বোমা নিক্ষেপের পরে তাদের নিয়োগ করা হয়। পরে নাম পাল্টে পিএসএস হয়। এত দিন দায়িত্বে থাকার সুবাদে পিএসএস কর্মীরা সব সাংসদদের চিনতেন। নিরাপত্তার নামে কাউকে হেনস্থা হতে হত না। এখন সিআইএসএফ-এর সঙ্গে সেই বাহিনীকে আর রাখা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, এখন সংসদ চত্বরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ১,৪০০ সিআরপি জওয়ান ছিলেন। তাঁদের সরিয়ে প্রায় ৩,৩০০ সিআইএসএফ জওয়ান নিয়োগ করা হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরে রঙের গ্যাস ক্যানিস্টার নিয়ে দুই তরুণ দর্শক গ্যালারি থেকে লোকসভার মধ্য নেমে পড়েছিলেন। তার পরেই সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা শুরু হয়।
সূত্রের বক্তব্য, তার পরেই সিআরপিএফের বদলে সিআইএসএফ নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত কাল থেকে সিআইএসএফ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমকে সাংসদ তিরুচি শিবা জানিয়েছেন, গত কাল তাঁকে সংসদে গিয়ে অন্তত তিন বার পরিচয়পত্র দেখাতে হয়েছে। জহরের বক্তব্য, ‘‘আগের কর্মীরা সমস্ত সাংসদকে দেখেই চিনতে পারতেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)