শিল্পী সৈয়দ আইজাজ শাহ। ছবি: টুইটার।
জাতীয় পুরস্কারজয়ী শিল্পী তিনি। পেপার ম্যাশ বা কাগজের মণ্ড থেকে শিল্পদ্রব্য তৈরির জাদুকর। ঘুরেছেন গোটা পৃথিবী, তাঁকে নিয়ে লেখা হয়েছে দেশ-বিদেশের সংবাদমাধ্যমে। সেই তিনিই পেটের টানে অটো চালাচ্ছেন শ্রীনগরে। জনৈক আরোহী তাঁকে চিনতে পেরে সেই কাহিনি লিখেছেন টুইটারে।
১৯ তারিখ খাওয়ার খান আচাকজাই নামে এক নেটিজেন টুইটারে পরপর টুইট আর ছবি শেয়ার করে লিখেছেন শিল্পী সৈয়দ আইজাজ শাহের কথা। তিনি বলছেন, ‘‘আজকের যানজটের একমাত্র ভাল (আসলে দুঃখের) দিক হল, আমি একটা অটো নিলাম আর চালক সৈয়দ আইজাজকে চিনতে পারলাম। বহু পুরস্কার এবং প্রশংসাজয়ী শিল্পী। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও তাঁর কাজ সমাদৃত এবং পুরস্কৃত হয়েছে।’’ ভারতের কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকও তো পুরস্কার দিয়েছে সৈয়দ আইজাজকে। বহু দেশে গিয়েছেন কাজ শেখাতে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম তাঁকে নিয়ে লিখেছে। কিন্তু শিল্প তাঁর ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতে পারেনি। আচাকজাই লিখেছেন, ‘‘কাশ্মীরে হস্তশিল্প থেকে আয় হয় সামান্যই। আইজাজ তা থেকে পরিবারকে টানতে পারেন না। পুরস্কার আর স্বীকৃতির চেয়ে টুক-টুক চালানোই এখন তাঁর কাছে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
এতদ্সত্ত্বেও আইজাজ কিন্তু তাঁর শিল্পকে ভোলেননি। আচাকজাই লিখেছেন, ‘‘আইজাজ চমৎকার মানুষ! এখনও উনি সকাল আর সন্ধেয় সময় বার করে ওঁর হাতের কাজ নিয়ে বসেন। দিনে অটো চালান। সন্ধেয় ডুবে যান রঙের জগতে। অসমাপ্ত ম্যুরাল আর অবশিষ্ট স্বপ্নের জগতে।’’ আইজাজের কাজ করার ছবিও দিয়েছেন আচাকজাই। আইজাজ একা নন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, কাশ্মীরের পেপার-ম্যাশ শিল্পের অবস্থা সামগ্রিক ভাবেই খারাপ। চতুর্দশ শতকে পারস্য থেকে যে শিল্পের আমদানি হয় ভূস্বর্গে, আজ তার গরিমা আর বেঁচে নেই। শিল্পীরা অনেকেই কাজ ছেড়ে কেউ অটো চালাচ্ছেন, কেউ সেলসের কাজ করছেন। আইজাজ নিজেও বলছেন, ‘‘আর পাঁচ-দশ বছরের বেশি আয়ু নেই এই শিল্পের। অনটনে সবাই একে একে কাজ ছাড়ছে। তকদীর বনি, বনকর বিগড়ি, দুনিয়া নে হমে বরবাদ কিয়া (ভাগ্য প্রসন্ন ছিল, ভাগ্যই মুখ ফেরাল। দুনিয়া আমাদের সর্বনাশ করে ছাড়ল)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy