সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
হাই কোর্টের বিচারপতিদের বদলি সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সুপারিশ কার্যকর করায় দেরি নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়ল নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্ট এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে ‘অস্বস্তিকর পদক্ষেপ’ করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিচারপতি এস কে কউলের বেঞ্চ। পাশাপাশি এ দিন কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য কলেজিয়ামের সুপারিশ করা পাঁচ নাম শীঘ্রই অনুমোদন করবে কেন্দ্র। সংসদেও আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুও জানান, বিভিন্ন হাই কোর্টে বিচারপতির শূন্য পদ দ্রুত পূরণ করার চেষ্টা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে বিগত বেশ কিছু দিন ধরে টানাপড়েন চলছে কেন্দ্র ও বিচার বিভাগের মধ্যে। কলেজিয়াম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিচারপতি নিয়োগ ও বদলি সম্পর্কে কলেজিয়ামের সুপারিশ কার্যকর করায় বিলম্ব নিয়ে মামলাও চলছে সুপ্রিম কোর্টে।
বিচারপতিদের বদলির সুপারিশ অনুমোদনে কেন্দ্রের তরফে বিলম্ব নিয়ে আগের শুনানিতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল শীর্ষ আদালত। এ দিনও বিষয়টি নিয়ে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান অ্যাটর্নি জেনারেল আর কে বেঙ্কটরামানি। জবাবে বিচারপতি কউল বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। যদি আমরা মনে করি কোনও বিচারপতি এক আদালতের বদলে অন্য আদালতে কাজ করা উচিত এবং আপনারা তা নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখেন তাহলে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আপনারা আমাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করতে পারেন যা সরকারের পক্ষে অস্বস্তিকর হয়ে দাঁড়াবে।’’ বিচারপতি কউল সাফ জানান, বিচারপতিদের বদলিতে কোনও ‘তৃতীয় পক্ষে’র হস্তক্ষেপ মেনে নেবেন তাঁরা। কয়েক জন বিচারপতির বদলির নির্দেশের বিরুদ্ধে গুজরাত, তেলঙ্গানা ও মাদ্রাজ হাই কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবাদ শুরু করেছে। বিচারপতি কউলের বক্তব্য, ‘‘নয়া বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে সরকারের বক্তব্য থাকতে পারে। কিন্তু বদলি নিয়ে তৃতীয় পক্ষকে কোনও খেলা আমরা খেলতে দেব না। এই বিষয়ে সরকারের ভূমিকা খুবই সীমিত।’’
এ দিন অ্যাটর্নি জেনারেল সুপ্রিম কোর্টে জানান, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য ডিসেম্বর মাসে কলেজিয়ামের সুপারিশ করা পাঁচ জনের নাম শীঘ্রই অনুমোদন করবে কেন্দ্র। ফলে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত বিচারপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩২ জনে। শীর্ষ আদালতে বিচারপতির ৩৪টি পদ রয়েছে। বর্তমানে ২৭ জন বিচারপতি কাজ করছেন।
আজ সংসদেও রিজিজু জানান, সরকার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বিভিন্ন হাই কোর্টে বিচারপতির শূন্য পদ পূরণের চেষ্টা করছে। কিন্তু কেবল বিচারপতির পদ শূন্য থাকার ফলেই হাই কোর্টে মামলার পাহাড় জমে নেই। তার অন্য অনেক কারণ রয়েছে।
অন্য দিকে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে মন্তব্য নিয়ে রিজিজু ও উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা শুনতে রাজি হয়েছে বম্বে হাই কোর্ট। ৯ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় ভি গঙ্গাপুরওয়ালার বেঞ্চে ওই আবেদনের শুনানি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy