ফাইল চিত্র।
মোদী সরকার যে ভাবে যে কোনও বিরোধিতার মুখে পড়লেই সুপ্রিম কোর্টের সাহায্যে বাধা কাটাতে চাইছে, তার পর সুপ্রিম কোর্টেরও আত্মসমীক্ষা করা উচিত বলে মত জানাল কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার মন্তব্য, “তিন কৃষি আইন নিয়ে যে ভাবে মোদী সরকার বারবার কৃষক নেতাদের সুপ্রিম কোর্টে যেতে বলছে, এবং কৃষকরা যে ভাবে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন, তার পরে সুপ্রিম কোর্টেরও অন্তরাত্মার দিকে তাকানো উচিত।”
শুক্রবারই তিন কৃষি আইনের বিরোধী কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বলেছিলেন, কৃষকরা চাইলে আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন। সেখানেই
তিন কৃষি আইনের বিচার হবে। কিন্তু আন্দোলনকারী কৃষক নেতারা সাফ জানিয়ে দেন, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন না। সরকার আইন করেছে, সরকারকেই আইন প্রত্যাহার করতে হবে। তা না করতে পারলে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকেই ইস্তফা দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছে কংগ্রেস।
তবে আন্দোলনকারীরা আদালতে যেতে রাজি না-হলেও মোদী সরকারের কষি আইনের সমর্থক কৃষকদের একটি সংগঠন ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। ‘কনসর্টিয়াম অব ইন্ডিয়ান ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিআইএফএ)’ নামে ওই সংগঠনটি আর্জি জানিয়েছে, শীর্ষ আদালতে কৃষি আইন সংক্রান্ত যে সব মামলা চলছে, তাদের ও অন্যান্য কৃষক সংগঠনকেও সেগুলির ‘পার্টি’ তথা সংশ্লিষ্ট পক্ষ হিসেবে গণ্য করা হোক। শোনা হোক তাদের বক্তব্যও। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে এক সুরে সিআইএফএ তাদের আবেদনে জানিয়েছে, তারা মনে করে, তিন কৃষি আইন কৃষকদের উপকারই করবে। তাঁদের আয় বাড়াবে ও বৃদ্ধি হবে কৃষি ক্ষেত্রের। সুপ্রিম কোর্ট তাই সরকারকে এই নির্দেশ দিক যে, তাদের ও অন্যান্য কৃষক সংগঠনের সঙ্গে কথা না-বলে যেন তিন কৃষি আইনের কোনও অংশ তারা যেন পরিবর্তন না করে। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের এক বেঞ্চে আগামী সোমবার এ নিয়ে শুনানি হবে।
কিন্তু আন্দোলনকারী কৃষকদের আদালতে যেতে না-চাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, “দেশের অন্নদাতারা কেন সুপ্রিম কোর্টে যেতে রাজি নন? সিএএ, এনআরসি, রাফাল বা কৃষির তিন কালো আইন‒ সরকার কেন বারবার সব কিছুর সমাধান সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে করতে চায়? যে সব প্রশ্নের সমাধান দেশের সংসদে হওয়া উচিত, তার সমাধান কেন সরকার সুপ্রিম কোর্টে চায়? উল্টো দিকে দেশের ৬২ কোটি অন্নদাতা যদি সুপ্রিম কোর্টে যেতে রাজি না-হন, তা হলে শীর্ষ আদালতেরও আত্মসমীক্ষা করা জরুরি।”
সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে আজ কংগ্রেসের সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক ও রাজ্যের পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঠিক হয়েছে, ১৫ জানুয়ারি কংগ্রেস সমস্ত জেলা সদরে ‘কিসান অধিকার দিবস’ পালন করবে। ওই দিন প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীতে রাজভবন ঘেরাও করে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হবে। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও বৈঠকে হাজির ছিলেন। প্রিয়ঙ্কা শুক্রবারই পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, বৈঠকে অনেকের মতো প্রিয়ঙ্কাও মত দেন, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব রয়েছে কংগ্রেসের। আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলি রাজনীতিকদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছেন। রাজনীতিকদের তাঁদের মঞ্চেও ঘেঁষতে দিচ্ছে না। কিন্তু কংগ্রেস আলাদা ভাবে আন্দোলন করতেই পারে। বাজেট অধিবেশনের আগে সরকার পিছু না-হটলে, সংসদ অচল করারও পরিকল্পনা করছেন কংগ্রেস নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy