অরুণাচল প্রদেশ ভারতেরই অংশ। আরও এক বার স্পষ্ট ভাষায় তা জানিয়ে দিল আমেরিকা। বুধবার আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বেদান্ত পটেল তাঁর দৈনন্দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমেরিকা অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ধরে জবরদখলের মাধ্যমে এলাকা দখলের কোনও একপাক্ষিক চেষ্টা হলে আমরা তার বিরোধিতা করব।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ৯ মার্চ অরুণাচল সফরে গিয়ে চিন সীমান্তবর্তী সেলা গিরিপথের ১৩ হাজার ফুট উচ্চতার দ্বিতীয় সুড়ঙ্গটির উদ্বোধন করেছিলেন। তার পরেই উত্তর-পূর্ব ভারতের ওই রাজ্য ঘিরে ‘তৎপরতা’ বৃদ্ধি করে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকার। এর আগে চিনা বিদেশ দফতর দাবি করেছিল, জাংনান (অরুণাচল প্রদেশের চিনা নাম) চিনের ভূখণ্ডের অংশ। তার পর বিতর্কে ঢুকে পড়ে চিনা ফৌজও। গত সোমবার চিনা পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) অরুণাচলকে ‘চিনা ভূখণ্ডের অংশ’ বলে চিহ্নিত করে।
মঙ্গলবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে কড়া জবাব দিয়ে এক বিবৃতিতে বলা হয়, চিনের দাবি পুরোপুরি অযৌক্তিক। মন্ত্রকের মুখপাত্র রণবীর জয়সওয়াল মঙ্গলবার বলেন, ‘‘অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চিন ক্রমাগত যুক্তিহীন কথাবার্তা বলে চলেছে। আমরা চিনা সামরিক বিভাগের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলি নজরে রেখেছি।’’
অরুণাচলকে ভারতীয় ভূখণ্ড হিসাবে কখনওই স্বীকৃতি দেয়নি চিন। তাদের দাবি, উত্তর-পূর্ব ভারতের ওই প্রদেশ অধিকৃত তিব্বতের দক্ষিণ অংশ। এর আগেও দু’বার অরুণাচলের বিভিন্ন অংশের নাম বদল করেছে চিন। ২০১৭ সালে দলাই লামার অরুণাচল সফরের পরে সে রাজ্যের ছ’টি জায়গার নাম বদল করে চিনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ২০২১ সালে আরও ১৫টি জায়গার নাম বদলের কথা জানিয়েছিল তারা। লাদাখের পাশাপাশি গত কয়েক বছরে তাওয়াং-সহ অরুণাচলের বেশ কিছু এলাকাতেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে চিনা ফৌজের অনুপ্রবেশের ‘খবর’ এসেছে। এই পরিস্থিতিতে পিএলএ-র এই আগ্রাসী মনোভাব নতুন করে সামরিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, এর আগেও অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’ বলে জানিয়েছে আমেরিকা। অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, গত জুলাই মাসে এই মর্মে আমেরিকার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটের সংশ্লিষ্ট কমিটিতে একটি প্রস্তাব পাশ করানো হয়।