পুজোয় ভারতীয় হাই কমিশনার (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
শ্রীলঙ্কায় সমুদ্রের ধারে বালিতে বসে ভারতের রাষ্ট্রদূত রামের ছবিতে পুজো করছেন ভক্তিভরে। এই ছবিটি আজ ভারতের সাংস্কৃতিক কূটনীতিতে নতুন মাত্রা জুড়ল বলে বিশেষজ্ঞ শিবিরের মত।
শিবরাত্রির তিথিতে, শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার গোপাল বাগলে দ্বীপরাষ্ট্রের রামসেতুতে গিয়ে পুজো করলেন। ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি বলা হয়েছে, ‘‘ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে বহু শতাব্দীপ্রাচীন রামসেতুতে গিয়ে পুজো দিয়েছেন হাই কমিশনার। দু’দেশের মানুষের মধ্যে পোক্ত বন্ধনের জন্য প্রার্থনা করেছেন তিনি। স্মরণ করেছেন সভ্যতাপ্রাচীন সম্পর্ক।’’
রামমন্দিরের পর এ বার রামসেতুর সত্যতা প্রমাণ করাটা মোদী সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, দক্ষিণ ভারত থেকে শ্রীলঙ্কা অবধি সমুদ্রের উপরে পৌরাণিক সেতুবন্ধন যে বাস্তবে ছিল, তা প্রমাণ করার দায় এখন সরকারের। সেতু ছিল বলে প্রমাণ হলে তবেই বিজ্ঞানমনস্করা এই বিতর্ক থেকে বিরত থাকবেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ শিবরাত্রিতেই তাঁর নির্মীয়মাণ ছবি ‘রাম সেতু’ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দিয়েছেন অভিনেতা অক্ষয়কুমার। সহ-অভিনেতাদের সঙ্গে ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘যে টিম একসঙ্গে প্রস্তুতি নেয়, তারা একসঙ্গেই সফল হয়। দুর্দান্ত চিত্রনাট্য পড়া হল। ছবির কাজ শুরুর জন্য আর তর সইছে না।’
অন্য দিকে শ্রীলঙ্কায় রামসেতুকে নিয়ে পূজা-অর্চনার পিছনে ঘরোয়া এবং দ্বিপাক্ষিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সামনেই তামিলনাড়ুর ভোট। শ্রীলঙ্কায় যে কোনও পদক্ষেপের প্রভাব ভারতের দাক্ষিণাত্যে পড়ে। তবে দক্ষিণ ভারতে হিন্দু আবেগ জাগ্রত করে ভোট-বৈতরণীতে কতটা সুবিধা হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহও রয়েছে। বরং শ্রীলঙ্কায় নতুন তৈরি হওয়া বৌদ্ধ-হিন্দু যে অক্ষ গড়ে উঠেছে, তার সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাইছে মোদী সরকার— এমনও মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে রাজাপক্ষে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষির প্রশ্নে কিছুটা সুবিধা পাওয়া এবং হিন্দু আবেগের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রটিও প্রশস্ত করা সম্ভব হবে তাঁদের মতে। শ্রীলঙ্কার ভারতীয় হাই কমিশন সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ভারত ক্রমশ এমন সব প্রকল্প হাতে নিচ্ছে যার ফলে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান বিস্মৃতির আড়াল থেকে সামনে আসবে। নিজেদের সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বাড়বে, ‘সফট পাওয়ার’কে কাজে লাগিয়ে। সেই লক্ষ্যেই শ্রীলঙ্কায় থিরুকেটেশ্বরম মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের কাজ ভারত হাতে নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে দূতাবাসের তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy