টানা ৭৫ ঘণ্টা তল্লাশির পর অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন পুণের বাসে ধর্ষণকাণ্ডের অভিযুক্ত। পুণের শিরুর থেকে অভিযুক্তকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চুরি, ছিনতাই, তোলাবাজি এবং ডাকাতি-সহ বেশ কয়েকটি মামলা চলছে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ২০১৯ সাল থেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অপরাধের দীর্ঘ তালিকা রয়েছে বিভিন্ন থানায়। ২০২০ সালে একটি ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। পাঁচ-ছয় মাস জেল খাটার পর আবার বেরিয়েও আসেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৯ সাল থেকে পাকাপাকি ভাবে অপরাধ জগতে প্রবেশ পুণের ধর্ষণকাণ্ডের অভিযুক্তের। কিন্তু তাঁর চালচলন, বেশভূষা দেখে পাড়া-প্রতিবেশী এমনকি আত্মীয়েরাও টের পাননি যে, একের পর এক অপরাধ করে চলেছেন। সকলের কাছে নিজেকে খুব সাধারণ এবং সরল ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করতেন। আর সেই সরলতা এবং সাদাসিধে ভাবমূর্তির আড়ালে কুকীর্তি চালিয়ে যেতেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে ঋণ নিয়ে একটি গাড়ি কিনেছিলেন অভিযুক্ত। পুণে-অহল্যানগর রুটে সেই গাড়ি চালাতেন।
গাড়িচালকের বেশে বেছে বেছে বয়স্ক মহিলাদের শিকার বানানো শুরু করেন তিনি। সাহায্য করার অছিলায়, বাড়িতে বা গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার নামে বয়স্ক মহিলাদের গাড়িতে তুলতেন, ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাঁদের টাকাপয়সা, গয়না সব কিছু লুট করতেন। তার পর তাঁদের মাঝরাস্তায় ছেড়ে দিয়ে চম্পট দিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে শিকরপুর, সুপা, কেড়গাঁও এবং কোতওয়ালি থানায় বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ২০১৯ সাল থেকেই জামিনে মুক্ত অভিযুক্ত।
বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, শুধু অপরাধমূলক কাজকর্মই নয়, যথেষ্ট রাজনৈতিক প্রভাবও ছিল অভিযুক্তের। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় থাকতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও ছবিতে দেখা গিয়েছে। এমনকি তাঁর গ্রামের সংঘর্ষ-মুক্তি সমিতির প্রধানের পদের জন্যও নির্বাচনে লড়েছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, স্বরগেট বাস ডিপো এলাকায় নিজেকে পুলিশ অফিসার হিসাবেও পরিচয় দিতেন। তাঁর দাপটও ছিল যথেষ্ট।
গত মঙ্গলবার পুণের স্বরগেট বাস ডিপোয় একটি ফাঁকা সরকারি বাসের ভিতরে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় টানা ৭৫ ঘণ্টা তল্লাশির পর অভিযুক্তকে তাঁর গ্রাম থেকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।