প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
ঝাড়খণ্ডে যখন প্রথম দফার নির্বাচন চলছে, ঠিক সেই সময়ে দেওঘরে (যেখানে দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ) গিয়ে অনুপ্রবেশ নিয়ে জেএমএম সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর অভিযোগ, জনজাতির সর্বস্ব হরণ করে অনুপ্রবেশকারীদের (বাংলাদেশি) জায়গা দেওয়া হচ্ছে। এটাগভীর ষড়যন্ত্র।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ভোটের প্রচারে বিজেপি নেতারা নিয়ম করে ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলছেন। এ বারে তাতে আরও ঘি ঢাললেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ঝাড়খণ্ডে যেখানে গিয়েছি, বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেছি। জনজাতিরা এ রাজ্যের গর্ব। তাঁদের সেই পরিচয় যদি শেষ হয়ে যায়, তা হলে তা মেনে নেওয়া যায় না। আপনাদের জল, জঙ্গল, জমি অন্যদের কব্জায় যাওয়ার উপক্রম। এই পরিস্থিতিতে আমাদের জনজাতি পরিবারকে বাঁচাতে হবে।’’ এই অনুপ্রবেশের জন্য বিরোধীদের কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘জেএমএম এবং কংগ্রেস ষড়যন্ত্র করে অনুপ্রবেশকারীদের এনে তাদের এখানে স্থায়ী ঠিকানা দিতে সর্বক্ষণ চেষ্টা করেছে। এক রাতের মধ্যে পাকা কাগজ বানিয়ে দিচ্ছে, জমি হরণ করছে। এই তো এখানকার সরকারের ভূমিকা! তারা আবার আদালতে বলছে ঝাড়খণ্ডে কোথাও অনুপ্রবেশ হয়নি।”
ভোটের প্রচারে মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডে লাগাতার জনজাতি, ওবিসি, দলিত তাস খেলছেন মোদী। রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেস যতই জাতগণনার পথে হাঁটার বার্তা দিচ্ছেন, মোদী ততই পাল্টা স্বর চড়াচ্ছেন। মোদীর কথায়, “তফসিলি জাতির কথা বললে সমস্ত জনজাতি দলিত এককাট্টা হয়ে যায়। ওবিসি বললে সমস্ত পিছড়ে বর্গ একজোট হয়। কংগ্রেস এই সামগ্রিক শক্তিকে টুকরো টুকরো করে ভাঙতে চায়।” তিনি তেলি, কুমার, মণ্ডল, যাদব, কোয়েরি, সোনার, ধানুক-সহ বিভিন্ন জাতের নাম করে বলেন, “এরা ওবিসি-র ছাতার তলায় একজোট হয়ে শক্তি বাড়িয়েছে। কংগ্রেস এদের নিজেদের মধ্যে লড়াতে চায়।”
জনজাতি, ওবিসি সম্প্রদায়ের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মনে রাখুন, এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়! আপনারাই আমার পরিবার।” লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর প্রসঙ্গ তুলে মোদীর বক্তব্য, “তাঁর বাবা ডঙ্কা বাজিয়ে সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার কথা বলে গিয়েছিলেন।”
দেওঘরে প্রচারের আগে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন বিহারের দ্বারভাঙায়। যেখান থেকে কার্যত ঝাড়খণ্ডের প্রচারের জন্যও সুর চড়ান। দ্বারভাঙায় উপলক্ষ ছিল নতুন এমস-এর শিলান্যাস-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের (মোট ১২ হাজার কোটি টাকার) উদ্বোধন করা। সেখানে ছিলেন বিজেপি-র শরিক দলের নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। মোদী তাঁর প্রচারের শুরুই করেন ঝাড়খণ্ডে চলতি ভোটদান পর্বের কথা উল্লেখ করে। আশা প্রকাশ করেন, জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার মানুষ আরও বেশি করে ভোট দেবেন। পাশাপাশি নীতীশ কুমারকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিতে দেখা যায় তাঁকে। মোদী বলেন, “নীতীশবাবু সুশাসনের মডেল প্রতিষ্ঠা করেছেন।’’
আজ নীতীশ কুমারকে দেখা গিয়েছে মোদীর মুখোমুখি হয়ে ঝুঁকে পড়ে প্রণাম করতে! শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৭৩ বছরের নীতীশের প্রণাম গ্রহণ করেননি ৭৪ বছরের মোদী। নীতীশ নমস্কার করে প্রধানমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে গিয়ে পা ছোঁয়ার চেষ্টা করেন। দ্রুত তাঁকে নিরস্ত করেন মোদী। নিজের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে নীতীশের হাত ধরে নেন তিনি। তার পর তাঁকে পাশের আসনে বসান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy