Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

PM Modi: ‘আব্বাসের পছন্দের পদও রাঁধতেন মা’

মা হীরাবেনের শততম জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতে শনিবার সকাল থেকেই মাতৃবন্দনায় রত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মাকে নিয়ে লিখলেন একটি দীর্ঘ ব্লগ।

একশোয় পা: মা হীরাবেনের জন্মদিন উপলক্ষে গান্ধীনগরের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার।

একশোয় পা: মা হীরাবেনের জন্মদিন উপলক্ষে গান্ধীনগরের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার। পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২২ ০৭:৩৬
Share: Save:

মা হীরাবেনের শততম জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতে শনিবার সকাল থেকেই মাতৃবন্দনায় রত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মাকে নিয়ে লিখলেন একটি দীর্ঘ ব্লগ, যেখানে উঠে এল মোদীর শৈশব এবং যৌবনের সংগ্রামের এবং আধ্যাত্মিক উন্মেষের বিভিন্ন অজানা কথা। ক্যামেরার সামনেই প্রবেশ করলেন গুজরাতের গান্ধীনগরে মাতৃগৃহে। দেখা গেল, মায়ের পা ধুইয়ে, তোয়ালে দিয়ে পা মুছিয়ে, সেই জল গভীর শ্রদ্ধায় চোখে ছোঁয়ালেন মোদী। একসঙ্গে আরতি করলেন মাতা-পুত্র। মাকে নিয়ে লেখা ব্লগটিতে (যা একইসঙ্গে প্রকাশিত হল ভারতের বিভিন্ন ভাষায়) এ কথাও জানালেন, পিতৃবন্ধুর অকালপ্রয়াণে তাঁর ছেলে ‘আব্বাস’ তাঁর পরিবারের সঙ্গেই বড় হন। ইদের দিন হীরাবেন সেই আব্বাসের প্রিয় পদটিও রাঁধতেন।

রাজনৈতিক শিবির বলছে, মার জন্মদিনকে কেন্দ্র করে দেশের সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন অভিনব আয়োজন ও অনুষ্ঠান দেশের ইতিহাসে বিরল। এ ক্ষেত্রেও মোদী অন্যদের তুলনায় স্বতন্ত্র। একইসঙ্গে নিজের পরিবারেই ইদ পালনের প্রসঙ্গ তুলে অসাম্প্রদায়িক পরিবেশে বড় হয়ে ওঠার বার্তাও দিয়েছেন মোদী। বিস্তারিত ভাবে লিখেছেন নিজের কঠোর অনুশাসন, সংস্কার এবং বৈষয়িক স্বার্থের প্রতি উদাসীন থেকে মানবসেবার শৈশবপ্রোথিত প্রবণতার কথাও।

মোদীর কথায়, “অন্য মানুষের আনন্দে মা খুশি হন। আমাদের বাড়ি খুব ছোট ছিল ঠিকই কিন্তু মার হৃদয় ছিল বিশাল। কাছাকাছি গ্রামে বাবার এক বন্ধু থাকতেন। অকালে তাঁর মৃত্যুর পরে, তাঁর ছেলে আব্বাসকে বাবা আমাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের বাড়ি থেকেই আব্বাস তার পড়াশোনা শেষ করেছিল। আমাদের ভাই-বোনদের প্রতি মা যতটা যত্নবান ছিলেন আব্বাসের প্রতিও ততটাই। প্রতি বছর ইদে মা ওর পছন্দের খাবার তৈরি করতেন। উৎসবের সময় পাড়ার সব বাচ্চারা আমাদের বাড়ি আসত মায়ের তৈরি খাবারের লোভে।” এর পরেই হিন্দু সাধুর প্রসঙ্গে এসেছেন মোদী। বলেছেন, “পাড়ায় কোনও সাধু এলে, মা তাঁদের এক বার বাড়িতে ডাকবেনই। নিজের জন্য কিছু চাইতেন না, কিন্তু চাইতেন সাধুরা তাঁর সন্তানদের আর্শীবাদ করুন। বলতেন, আমার সন্তানদের আর্শীবাদ করুন যাতে ওরা অন্যের খুশিতে খুশি হতে পারে আর অন্যের দুঃখে সহমর্মী হয়। ওদের মনে যেন ভক্তি আর সেবার মনোভাব থাকে।”

তাঁর নিজের আধ্যাত্মিক মনন আর শৈশবের সংগ্রামের চরিত ব্লগটিতে বিস্তারিত ভাবে রয়েছে। লিখেছেন, “বডনগরে আমাদের পরিবার একটা ছোট্ট জানালাহীন বাড়িতে থাকত। শৌচাগারের তো প্রশ্নই নেই। মাটির দেওয়াল আর টালির ছাদের এই ছোট্ট ঘরটিকেই আমরা আমাদের বাড়ি বলতাম। আমি, আমার ভাই-বোনেরা, বাবা-মা সবাই ওই বাড়িতে থাকতাম। বাঁশ আর কাঠের পাটাতন দিয়ে বাবা একটা মাচান তৈরি করেছিলেন যাতে মার রান্না করতে সুবিধা হয়। ওটাই ছিল আমাদের রান্নাঘর। মা মাচানের উপরে উঠে রান্না করতেন আর আমরা ওখানে বসে খেতাম।”

নিজের কঠোর অনুশাসনে থাকা জীবনের কথা বলতে গিয়ে মোদী লিখেছেন, “আমার নিজস্ব অভ্যেস ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মাকে সর্বদাই বিশেষ চাহিদা মেটাতে বাড়তি উদ্যোগী হতে হত।…যেমন আমি প্রায়ই এক নাগাড়ে কয়েক মাস করে লবণ খেতাম না অথবা কয়েক সপ্তাহ কোনও খাদ্য গ্রহণ না করে কেবলমাত্র দুধ পান করে থাকতাম। কখনও আবার আমি ছ’মাসের জন্য মিষ্টান্ন বর্জন করতাম। শীতকালে আমি খোলা জায়গায় ঘুমোতাম এবং মাটির পাত্রে রাখা ঠান্ডা জলে স্নান করতাম।” আধ্যাত্মিক চেতনার উন্মষের প্রসঙ্গে এসে মোদী বলেছেন, “আমি যখন বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই, আমি তাঁকে জানানোর আগেই মা সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আমি প্রায়ই বাবা-মাকে বলতাম, আমি বাইরে বেরিয়ে পড়তে চাই আর দুনিয়াটাকে বুঝতে চাই। আমি তাঁদের স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে বলতাম আর এ-ও বলতাম যে আমি রামকৃষ্ণ মিশন মঠে যেতে চাই। অবশেষে আমি গৃহত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাই এবং তাঁদের আশীর্বাদ প্রার্থনা করি। আমার বাবা একেবারেই ভেঙে পড়েছিলেন এবং বিরক্তি সহকারে বলেছিলেন, তোমার যা অভিরুচি। আমি তাঁদের জানাই, তাঁদের আশীর্বাদ ছাড়া আমি ঘর ছাড়ব না। মা আমার অভিপ্রায় বুঝে আশীর্বাদ করে বলেন, তোমার মন যা চায় তাই করো।… বাবা জ্যোতিষ জানা এক আত্মীয়র সঙ্গে পরামর্শ করেন। আমার কোষ্ঠী দেখে সেই আত্মীয় বলেছিলেন, ওর পথ আলাদা। ও সেই পথেই যাবে, সর্বশক্তিমান যা ওর জন্য নির্দিষ্ট করে রেখেছেন।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi PM Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy