Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Manipur Clash

মণিপুরের রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দিল ‘ইন্ডিয়া’, সংসদে অনাস্থা নিয়ে দ্রুত আলোচনার দাবি

রবিবার সকালে মণিপুরের রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধি দলে থাকা ২১ জন বিরোধী সাংসদ। তাঁরা প্রত্যেকে স্মারকলিপি তুলে দেন রাজ্যপালের হাতে।

Opposition INDIA bloc MPs met Manipur Governor, hand over joint memorandum

মণিপুরের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পর রাজভবনের বাইরে ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিদলের সদস্যেরা। রয়েছেন রাজ্যপাল অনুসুয়া উইকে-ও। ছবি: টুইটার।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
ইম্ফল শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৩ ১২:৫৯
Share: Save:

মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূয়া উইকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর হাতে স্মারকলিপি তুলে দিলেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ২১ জন সাংসদ। হিংসাবিধ্বস্ত মণিপুরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ‘ইন্ডিয়া’র একটি প্রতিনিধি দল শনিবারই সে রাজ্যে পৌঁছয়। রবিবার তাঁদের মণিপুর সফরের শেষ দিন। রবিবার সকালেই মণিপুরের রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন প্রতিনিধি দলে থাকা ২১ জন বিরোধী সাংসদ। সংবাদমাধ্যমের সামনে মণিপুরের ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথা জানিয়ে কেন্দ্রের কাছে সংসদে তাঁদের তরফে পেশ করা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে দ্রুত আলোচনার দাবি জানিয়েছেন বিরোধী সাংসদেরা।

রাজভবন থেকে বেরিয়ে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “২১ জন সাংসদ আলাদা ভাবে স্মারকলিপি তুলে দিয়েছেন রাজ্যপালের হাতে। দু’দিনের সফরে সারা রাজ্যে ঘুরে আমরা যা দেখেছি, যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি, তার সব কিছু রাজ্যপালকে জানিয়েছি। উনি আমাদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।” এই প্রসঙ্গে অধীর জানান, রাজ্যপাল তাঁদের সব দলকে নিয়ে একটি প্রতিনিধি দল গড়ে মণিপুরে আসার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং সঙ্কট কাটাতে রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।

মণিপুরের পরস্থিতিকে ‘ভীতিপ্রদ’ বলে বর্ণনা করে রবিবার সকালেই অধীর বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যে সম্প্রীতির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।” কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকারের সমালোচনা করে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “আমরা চাইছি রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ করুন রাজ্যপাল।” মণিপুরের আশ্রয় শিবিরগুলিতে ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই এমনটা দাবি করে কংগ্রেস সাংসদ ফুলোদেবী নেতাম সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে বলেন, “একটা বড় ঘরে ৪০০-৫০০ জনকে রাখা হচ্ছে। রাজ্য সরকার কেবল চাল আর ডাল দিচ্ছে। কিন্তু ছোটদের খাওয়ার মতো কিছু নেই। নেই কোনও শৌচাগারও।”

শনিবার ইম্ফলে পৌঁছেই অধীরেরা হেলিকপ্টারে জনজাতি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুরে হিংসায় ঘরছাড়াদের আশ্রয় শিবিরে যান। অধীর বলেন, ‘‘মণিপুরের ঘটনায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদীয় প্রতিনিধি দলের মণিপুর সফর নিয়ে অবশ্য খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর শনিবার বলেন, ‘‘বিরোধীরা মণিপুরের পরিস্থিতিকে হাতিয়ার করে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।’’ বিরোধী সাংসদেরা মণিপুরে ছবি তোলাতে গিয়েছেন বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে অনুরাগের অভিযোগ, আগের সরকারের আমলে ছ’মাস ধরে অচলাবস্থা চলেছিল মণিপুরে।

লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির ২১ জন সাংসদের প্রতিনিধি দল শনিবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপি শাসিত ওই রাজ্যের পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছে। দলে রয়েছেন তৃণমূলের সুস্মিতা দেব, ডিএমকের কানিমোঝি, সিপিএমের এএ রহিম, জেডিইউয়ের লালন সিংহ, আরজেডির মনোজ ঝা, জাভেদ আলি খান, শিবসেনার (বালাসাহেব) অরবিন্দ সাওয়ন্ত, আম আদমি পার্টির সুশীল গুপ্ত, সিপিআইয়ের পি সন্তোষ কুমার, আইইউএমএলের ইটি মহম্মদ বশির, আরএলডির জয়ন্ত চৌধুরী, ভিসিকের থল তিরুমালব্যনের মতো বিরোধী জোটের সাংসদেরা।

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy