Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Odisha Tribal Woman

ইউটিউব দেখে পড়াশোনা করেই সিভিল সার্ভিস পাশ! কন্যার সাফল্যে গর্বিত রাঁধুনি বাবা

এক সাক্ষাৎকারে বিনি বলেন, ‘‘জানতাম, আমার বাবা-মা কোচিংয়ের জন্য জন্য টাকা জোগাতে পারবেন না। কিন্তু অর্থাভাবকে আমার স্বপ্নের বাধা হতে দিইনি।’’

মা এবং বাবার সঙ্গে (মাঝে) বিনি মুরুলি। ছবি: সংগৃহীত।

মা এবং বাবার সঙ্গে (মাঝে) বিনি মুরুলি। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৩২
Share: Save:

কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার মতো অর্থ ছিল না তাঁর। মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। বাবা রান্নার কাজ করেন। দু’জনে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে কোনও রকমে সংসার চলে। ফলে কন্যাকে কোচিং সেন্টারে ভর্তি করিয়ে পড়ানোর মতো সামর্থ ছিল না তাঁদের। কিন্তু কন্যা যে এক জন প্রশাসক হতে চান। তাঁর স্বপ্ন পূরণ হবে কী ভাবে? এ ভাবনা যখন দম্পতিকে কুরে কুরে খাচ্ছিল, কন্যাই তাঁদের আশ্বস্ত করেন। তিনি বোঝান, কোচিং সেন্টারের প্রয়োজন নেই, নিজেই পড়াশোনা করে সিভিল সার্ভিস পাশ করবেন। তার পর থেকেই লড়াই শুরু। এল সাফল্যও। আর এই পরীক্ষা পাশ করার জন্য ইউটিউবের সহযোগিতা নেন তিনি।

বিনি মুরুলি। ওড়িশার বোন্দা আদিবাসী সম্প্রদায়ের তরুণী। ইউটিউব ভিডিয়ো দেখে এবং ইন্টারনেট ঘেঁটে নিজেই ওড়িশা সিভিল সার্ভিস-এর প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। তাতে পাশও করেন তিনি। ৫৯৬ র‌্যাঙ্ক হয়েছে বিনির। বোন্দা সম্প্রদায় থেকে বিনিই প্রথম এত উচ্চপদের একটি চাকরি পেলেন। ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিনি বলেন, ‘‘জানতাম, আমার বাবা-মা কোচিংয়ের জন্য জন্য টাকা জোগাতে পারবেন না। কিন্তু অর্থাভাবকে আমার স্বপ্নের বাধা হতে দিইনি। তাই ইউটিউব দেখেই পড়াশোনা শুরু করলাম। ইন্টারনেট থেকে পরীক্ষার জন্য স্টাডি মেটিরিয়ালও জোগাড় করে ফেলেছিলাম।’’

ওড়িশার মালকানগিরির খেমাগুড়ার বাসিন্দা বিনি। মা সুনামালি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। বাবা রাম মুরুলি সরকারি বিদ্যালয়ে রান্নার কাজ করেন। বোন্দার ঘাটের একটি সরকারি স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন বিনি। তার পর উচ্চশিক্ষার জন্য জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বিনি বলেন, ‘‘জেপুরের বিক্রম দেবী কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করেছি।’’ পড়াশোনার পাশাপাশি একটি আয়ুবের্দিক ওষুধ সংস্থাতেও কাজ করেছেন। সেখান থেকে যা উপার্জন করেছেন, সেই টাকা দিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। ২০২০ সালে প্রথম বার সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন। কিন্তু পাশ করতে পারেননি। বিনি জানান, ওই পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে বুঝেছিলেন, এখনও নিজেকে প্রস্তুত করতে অনেক কসরত করতে হবে। সেই থেকে তাঁর স্বপ্ন পূরণের লড়াই শুরু। কোচিং সেন্টারে যাননি। ইউটিউবের ভরসাতেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। অবশেষে তাঁর সেই প্রচেষ্টা সার্থক হয়ে বলে জানান বিনি।

কন্যার সাফল্যে গর্বিত রাম মুরুলি। তিনি বলেন, ‘‘ওর এই সাফল্য আমাদের সম্প্রদায়ের অনেক মেয়েকেই অনুপ্রেরণা জোগাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Odisha Tribal woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy