Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

Nupur Sharma: সঙ্কটে মোদীর আরব-নীতি, শঙ্কা বাণিজ্য নিয়েও

বিজেপি নেতানেত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্যে কোভিডের মধ্যেও বেঁচে থাকা এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে গেল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ০৮:১৩
Share: Save:

তিল তিল করে গত আট বছর ধরে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কট্টর সমালোচকেরাও বলতে বাধ্য হয়েছেন, বিদেশনীতির ক্ষেত্রে মোদীর এই উদ্যোগ মাইলফলক। কিন্তু পয়গম্বরকে ঘিরে তাঁর দলের নেতানেত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্যকে ঘিরে যে আরব্য-রোষ তৈরি হল, তাতে কোভিডের মধ্যেও বেঁচে থাকা এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে গেল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

বিষয়টি শুধু আরব দেশগুলির সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নয়। দেশের জাতীয় অর্থনৈতিক নিরাপত্তার সঙ্গেও তা সম্পর্কযুক্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে এবং আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ক্রমশ কড়া হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শক্তিক্ষেত্রে ভারত বিকল্পের সন্ধান করছে। ইরান থেকেও তেল আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরব, বা সংযুক্ত আরব আমিরশাহি বা কাতার, কুয়েতের উপর শক্তিক্ষেত্রে ভারতের নির্ভরতা এখন অনেকটাই। নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি বলে পরিচিত গৌতম আদানির সংস্থা আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে কাতারের বাণিজ্য-সম্পর্ক গভীর। কাতারের সরকারি লগ্নি তহবিল ‘কাতার ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’ আদানি ইলেকট্রিসিটির ২৫.১ শতাংশ মালিকানা কিনে নিয়েছিল, যে বিনিয়োগের মূল্য তিন হাজার দু’শো কোটি টাকা। পাশাপাশি আদানি এয়ারপোর্ট হোল্ডিং লিমিটেড-এর সঙ্গেও কাতারের সরকারি লগ্নি তহবিলের কথা চলছে। মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেডের একটি ছোট অংশের মালিকানা তারা কিনতে পারে। এখন এই বিনিয়োগগুলিতে আরব্য-রোষ কতটা প্রভাব ফেলে, সেটা দেখার।

অন্য দিকে, দীর্ঘ দৌত্যের পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি সবে সই করেছে ভারত। ঠিক একই রকম চুক্তি গাল্‌ফ কো-অপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি)-এর সঙ্গেও হওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই ভারতের সঙ্গে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলির জোট জিসিসি-র ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য-সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ২০২০-২০২১ সালে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮৭০০ কোটি ডলার। এই জোটে আছে কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। মোদীর প্রত্যক্ষ দৌত্যে আমেরিকা, ইজ়রায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-র সঙ্গে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর ইকনমিক কোঅপারেশন’-এ জায়গা করে নিয়েছে ভারত।

ঘটনা হল, এখন কাতার, সৌদি আরব, ইরান, জর্ডন, বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া, মলদ্বীপ, এমনকি তালিবান শাসিত আফগানিস্তানও (যেখানে ভারতের বহু প্রকল্প চলছে এবং সদ্য কাবুলের দরজা খোলার চেষ্টা শুরু হয়েছে) প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে এবং ভারতীয় দূতকে ডেকে পাঠিয়ে মোদী সরকারের উপর ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে। এই দেশগুলির বিভিন্ন কাগজে এই খবরের সঙ্গে সর্বাগ্রে আসছে নরেন্দ্র মোদীর নাম। কূটনৈতিক শিবির বলছে, তার কারণ সে ভাবেই মোদী নিজেকে তুলে ধরছিলেন সরকারের ‘একমেবাদ্বিতীয়ম’ মুখ হিসাবে। এখন তা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে।

নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালে আবু ধাবিতে একটি হিন্দু মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তখন এটিকে ভারতের সঙ্গে উপসাগরীয় অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের উদাহরণ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। পাশাপাশি গত কয়েক বছরে দিল্লির সঙ্গে তেহরানের সম্পর্ক আগের মতো আর উষ্ণ নেই। কিন্তু তা নেহাত খারাপও নয়। সেই ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির আবোল্লাহিয়ানের আসন্ন নয়াদিল্লি সফরে এই বিতর্ক প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Nupur Sharma
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy