(বাঁ দিকে) মণিপুরের হিংসার ছবি। (ডান দিকে) মালদহের মহিলা নির্যাতন নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োর দৃশ্য। ফাইল চিত্র ।
৩ মে থেকে শুরু হয়ে প্রায় তিন মাস ধরে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চলা জাতিগত হিংসার ঘটনাগুলি নিয়ে অবশেষে হস্তক্ষেপ করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মঙ্গলবার গভীর রাতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে মণিপুরের এন বীরেন সিংহ সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ, সেই রাজ্যে যাতে আর কোনও হিংসার ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।
ঘটনাচক্রে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ঘটে যাওয়া মালদহের বামনগোলায় দুই মহিলা নির্যাতনের ঘটনাতে মঙ্গলবার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলা পুলিশ সুপারকে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। তার মধ্যেই গত ৪ মে মণিপুরে দুই কুকি মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো এবং গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। মণিপুরে গত পৌনে তিন মাসের হিংসাপর্ব এবং ওই দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়ো (যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) এবং গণধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বার বার মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। মণিপুরে হিংসার ঘটনার সূত্রপাতের প্রায় তিন মাস পর মঙ্গলবার সে রাজ্যের সরকারকে চিঠি পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
মঙ্গলবার মানবাধিকার কমিশনের পাঠানো এই চিঠিতে মণিপুরের সরকারকে হিংসার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানবাধিকার কমিশনের প্যানেল বলেছে, ‘‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে আর কোনও হিংসার ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।’’
কমিশনের পর্যবেক্ষণ, হিংসাদীর্ণ মণিপুরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা এবং তার ভিত্তিতে প্রশাসনের করা পদক্ষেপের অনেক রিপোর্ট জমা দেয়নি সে রাজ্যের সরকার। কমিশনের তরফে সেই রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে হিংসার কারণে ক্ষতির মুখে পড়া পরিবারের সংখ্যা এবং তাদের দেওয়া ক্ষতিপূরণের পরিমাণ। একই সঙ্গে হিংসার ঘটনা রুখতে সরকারের তরফে কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের তরফে।
অন্য দিকে, গত শুক্রবার রাতে মালদহ জেলার পাকুয়াহাটে চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে গণপ্রহারের একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। যদিও তা মঙ্গলবার বিকেলের বলে দাবি পুলিশের। অভিযোগ, বিবস্ত্র করে মারধর এবং জুতোপেটা করা হয় ওই দুই মহিলাকে। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ওই দুই মহিলাকে নির্যাতনের ঘটনার জেরে বিরোধী বিজেপি শিবিরের তরফে গত ২৩ জুলাই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগটি করেন উত্তর মালদহ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি তথা মালদহ জেলা আদালতের আইনজীবী উজ্জ্বল দত্ত। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে রিপোর্ট তলব করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মালদহের জেলা পুলিশ সুপারকে। পুলিশ সুপারের পাশাপাশি, রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং ডিজিপি-কেও বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy