Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Manipur Violence

বিবস্ত্র করে হাঁটানোর কথা আগেই জানতে পেরেছিল জাতীয় মহিলা কমিশন? মণিপুরকাণ্ডে নয়া বিতর্ক

জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা শুক্রবার কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, মণিপুরে মহিলাদের উপর অত্যাচারের বিভিন্ন ঘটনার কথা আগেই তাঁদের ‘নজরে’ এসেছিল।

National Commission for Women allegedly ignored Manipur sexual violence complaint for month

জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৩ ১৫:৪০
Share: Save:

মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনার ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) এবং গণধর্ষণের অভিযোগ অনেক আগেই জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে পৌঁছেছিল বলে দাবি উঠল এ বার। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার নিয়ন্ত্রিত মহিলা কমিশন সেই অভিযোগ উপেক্ষা করেছিল বলে দাবি উঠেছে।

বুধবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মণিপুরের ওই ভিডিয়ো ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। ছবিটি গত ৪ মে তোলা বলে দাবি মণিপুর পুলিশের। মহিলাদের উপর নির্যাতনের ওই ঘটনার নিয়ে গত ১২ জুন জাতীয় মহিলা কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছিল বলে শুক্রবার ইন্ডিয়া টুডেতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। ওই অভিযোগপত্রের একটি প্রতিলিপিও প্রকাশ করা হয়েছে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে। সেখানে মোট তিন জন মহিলার উপর যৌন নির্যাতন এবং তাঁদের মধ্যে দু’জনকে নগ্ন করে হাঁটানোর অভিযোগ রয়েছে।

জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা শুক্রবার কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, মণিপুরে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অনেকগুলি অভিযোগই তাঁদের নজরে এসেছিল। এ বিষয়ে তিনি দায় চাপিয়েছেন সে রাজ্যের বিজেপি সরকারে কাঁধে। রেখা শুক্রবার বলেন, ‘‘গত তিন মাসে আমরা তিন বার মণিপুর সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি।’’ তবে মণিপুরের ঘটনা নিয়ে অনেক মিথ্যা অভিযোগ তাঁদের কাছে পৌঁছেছিল বলেও জানান জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগকারীরা মণিপুরের ছিলেন না, এমনকি ভারতের নন।’’

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল মণিপুরে। পরের দিনই থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার অদূরে ওই দুই মহিলার উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলের অদূরেই কঙ্গপকপি জেলার সীমানা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট সক্রিয় হয়েছে, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ শুক্রবারের মধ্যে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকারের কাছে। ঘটনাচক্রে, ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই সক্রিয় হয়েছে বিজেপি শাসিত মণিপুরের পুলিশ। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।

নির্যাতিতাদের মধ্যে এক জন ইতিমধ্যেই গত ৪ মের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা সে দিন তাঁদের জনসমক্ষে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল। সেই ঘটনা নিয়ে গত ১৮ মে কঙ্গপকপি জেলার বি ফাইনম গ্রামের প্রধানের সাহায্যে ওই জেলারই সাইকুল থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। দায়ের করেছিলেন, ‘জ়িরো এফআইআর’। প্রসঙ্গত, ‘সাধারণ এফআইআর’ বলে, ঘটনাস্থল যে থানা এলাকায়, এফআইআর দায়ের করতে হবে সেখানেই। কিন্তু ‘জ়িরো এফআইআর’ যে কোনও থানায় দায়ের করা যায়। অপরাধের ঘটনা যে থানার এলাকাতেই ঘটুক না কেন। ওই থানা অভিযোগ তখন সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ, এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে নির্যাতিতা বা তাঁর পরিবারের লোকেদের ঘটনাস্থলের থানায় যেতে হয় না।

২১ বছরের ওই মহিলা বলেছেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের অনেকের হাতে একে-৪৭, ইনসাস, এসএলআর-সহ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গ্রামে ঢুকে তারা নির্বিচারে বাড়িতে আগুন ধরায়, মানুষ খুন করে। আমরা পাঁচ জন— তিন মহিলা এবং দু’জন পুরুষ (নির্যাতিতার বাবা এবং ভাই) দৌড়ে পাশের জঙ্গলে ঢুকে পড়ায় তখনকার মতো বেঁচে গিয়েছিলাম।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy