জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনার ভিডিয়ো (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) এবং গণধর্ষণের অভিযোগ অনেক আগেই জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে পৌঁছেছিল বলে দাবি উঠল এ বার। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার নিয়ন্ত্রিত মহিলা কমিশন সেই অভিযোগ উপেক্ষা করেছিল বলে দাবি উঠেছে।
বুধবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মণিপুরের ওই ভিডিয়ো ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। ছবিটি গত ৪ মে তোলা বলে দাবি মণিপুর পুলিশের। মহিলাদের উপর নির্যাতনের ওই ঘটনার নিয়ে গত ১২ জুন জাতীয় মহিলা কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছিল বলে শুক্রবার ইন্ডিয়া টুডেতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। ওই অভিযোগপত্রের একটি প্রতিলিপিও প্রকাশ করা হয়েছে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে। সেখানে মোট তিন জন মহিলার উপর যৌন নির্যাতন এবং তাঁদের মধ্যে দু’জনকে নগ্ন করে হাঁটানোর অভিযোগ রয়েছে।
জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা শুক্রবার কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, মণিপুরে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অনেকগুলি অভিযোগই তাঁদের নজরে এসেছিল। এ বিষয়ে তিনি দায় চাপিয়েছেন সে রাজ্যের বিজেপি সরকারে কাঁধে। রেখা শুক্রবার বলেন, ‘‘গত তিন মাসে আমরা তিন বার মণিপুর সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি।’’ তবে মণিপুরের ঘটনা নিয়ে অনেক মিথ্যা অভিযোগ তাঁদের কাছে পৌঁছেছিল বলেও জানান জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগকারীরা মণিপুরের ছিলেন না, এমনকি ভারতের নন।’’
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল মণিপুরে। পরের দিনই থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার অদূরে ওই দুই মহিলার উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলের অদূরেই কঙ্গপকপি জেলার সীমানা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট সক্রিয় হয়েছে, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ শুক্রবারের মধ্যে ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকারের কাছে। ঘটনাচক্রে, ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই সক্রিয় হয়েছে বিজেপি শাসিত মণিপুরের পুলিশ। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।
#WATCH | On Manipur viral video and NCW's letter to the state authority, Commission's chief Rekha Sharma says, "...We are in touch with the officers from Manipur...Not one specific but there were many complaints and that too from people outside India and outside Manipur. Firstly,… pic.twitter.com/KZUH4ZmgfV
— ANI (@ANI) July 21, 2023
নির্যাতিতাদের মধ্যে এক জন ইতিমধ্যেই গত ৪ মের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা সে দিন তাঁদের জনসমক্ষে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল। সেই ঘটনা নিয়ে গত ১৮ মে কঙ্গপকপি জেলার বি ফাইনম গ্রামের প্রধানের সাহায্যে ওই জেলারই সাইকুল থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। দায়ের করেছিলেন, ‘জ়িরো এফআইআর’। প্রসঙ্গত, ‘সাধারণ এফআইআর’ বলে, ঘটনাস্থল যে থানা এলাকায়, এফআইআর দায়ের করতে হবে সেখানেই। কিন্তু ‘জ়িরো এফআইআর’ যে কোনও থানায় দায়ের করা যায়। অপরাধের ঘটনা যে থানার এলাকাতেই ঘটুক না কেন। ওই থানা অভিযোগ তখন সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ, এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে নির্যাতিতা বা তাঁর পরিবারের লোকেদের ঘটনাস্থলের থানায় যেতে হয় না।
২১ বছরের ওই মহিলা বলেছেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের অনেকের হাতে একে-৪৭, ইনসাস, এসএলআর-সহ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গ্রামে ঢুকে তারা নির্বিচারে বাড়িতে আগুন ধরায়, মানুষ খুন করে। আমরা পাঁচ জন— তিন মহিলা এবং দু’জন পুরুষ (নির্যাতিতার বাবা এবং ভাই) দৌড়ে পাশের জঙ্গলে ঢুকে পড়ায় তখনকার মতো বেঁচে গিয়েছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy