চলতি মাসেই দলের সর্বভারতীয় সভাপতি বেছে নেওয়ার কাজ সেরে ফেলতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। নতুন সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা থাকলেও, নতুন সভাপতির নেতৃত্বে যে কমিটিগুলি আগামী দিনে গঠিত হবে, তাতে মহিলা সদস্যের সংখ্যা ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে দল।
মেয়েদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ওই আইনের মাধ্যমে লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু ওই আইন লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হওয়ার পরেই কার্যকর হওয়ার কথা। এ দিকে, লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস নির্ভর করে রয়েছে জনগণনার উপরে। যা আগামী বছর শুরু হওয়ার কথা। ফলে ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই আইন কার্যকর করা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তাই দলীয় মঞ্চে যাতে মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে তৎপর বিজেপি নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘যখন সময় আসবে, তখন লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে ওই আইনের প্রয়োগ হবে। মহিলাদের ক্ষমতায়ন, রাজনীতিতে তাঁদের আরও বেশি করে আসার জন্য উৎসাহ দিতেই ওই আইন আনা হয়েছে। তাই দলীয় ভাবে দ্রুত তা প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
বিজেপি সূত্র বলছে, নতুন সভাপতি ক্ষমতায় এসেই দলের কর্মসমিতির বৈঠক ডাকতে চলেছেন। খুব সম্ভবত সেই বৈঠক হবে বেঙ্গালুরুতে। আগামী জাতীয় কর্মসমিতি ও জাতীয় পরিষদে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব। দলের সংসদীয় বোর্ড ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির নীতি নির্ধারক কমিটিগুলিতেও ৩৩ শতাংশ মহিলার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন যুবকদের বিজেপির বিভিন্ন পদে তুলে আনার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। সূত্রের মতে, পরিবারবাদ নীতির বিরোধী বিজেপিতেও ওই বেনোজল ধীরে ধীরে প্রবেশের অশনি সঙ্কেত দেখতে পেয়েছেন
আরএসএস নেতৃত্ব। বিশেষ করে অন্য দল থেকে আসা নেতাদের ক্ষেত্রে তাঁর পুত্র বা পরিবারের অন্য সদস্যদেরও স্থান করে দিতে হচ্ছে বাধ্য হচ্ছে বিজেপি। ফলে যাঁরা একনিষ্ঠ ভাবে আরএসএস সঙ্গে যুক্ত বা একেবারে নিচু পর্যায়ে থেকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁরা পদপ্রাপ্তির প্রশ্নে বঞ্চিত হচ্ছেন। ওই অসাম্য রুখতে তাই একনিষ্ঠ ভাবে দল করা কর্মীদের আগামী দিনে প্রাধান্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আরএসএস। তা না হলে আগামী দিনে যুবকেরা বিজেপি-আরএসএসে যোগ দিতে উৎসাহ হারাবেন বলেই আশঙ্কা করছেন গেরুয়া নেতৃত্ব।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)