সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মুক্তি পেলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে খুনের মামলার অপরাধী নলিনী শ্রীহরণ। ছবি: পিটিআই।
মুক্তির দাবিতে গত তিন দশকে একাধিক বার অনশন করেছেন। বছর দু’য়েক আগে এক বার ভেলোর সংশোধনাগারে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে খুনের মামলায় অপরাধী নলিনী শ্রীহরণ। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ৩১ বছর পরে এল সেই কাঙ্ক্ষিত মুক্তি।
প্যারোলে মুক্ত নলিনী শনিবার সকালে শর্ত মেনে ভেলোরের একটি থানায় হাজিরা দেন। এর পর নিয়ম মেনে তাঁকে জেলে ফেরত যেতে হয়। বিকেলে শীর্ষ আদালতের রায় এসে পৌঁছনোর পরে তাঁকে ছেড়ে দেন ভেলোর কারাগার কর্তৃপক্ষ। ছাড়া হয় নলিনীর স্বামী মুরুগানকেও।
শুক্রবার দেশের শীর্ষ আদালত রাজীব হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছ’জনকে শুক্রবার মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। এই তালিকায় নলিনী শ্রীহরণ এবং তাঁর স্বামী মুরুগান ছাড়াও রয়েছেন, রবিচন্দ্রন, শান্থন, রবার্ট পায়াস এবং জয়কুমার। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট রাজীব খুনের মামলার আর এক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পেরারিভালনকে মুক্তি দিয়েছিল।
২০১৮-য় তামিলনাড়ুর তৎকালীন এডিএমকে মন্ত্রিসভা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের সময়ের আগে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিধানসভায় পাশা করানো হয় বিল। সেই বিল তামিলনাড়ুর তৎকালীন রাজ্যপাল বানওয়ারিলাল পুরোহিতের কাছে গেলে তা তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। রাজ্যপাল বিষয়টি চার বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পেরারিভালন।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশে পেরারিভালনের মুক্তির পর নলিনী এবং রবিচন্দ্রন মুক্তি চেয়ে মাদ্রাজ হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। গত জুন মাসে মাদ্রাজ হাই কোর্ট এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে ‘পরামর্শ’ দেয় নলিনীদের। এ বার একই যুক্তিতে তিন দশক জেলবন্দি নলিনীদের মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নলিনী এবং অন্য অভিযুক্তেরা শনিবার জেল থেকে মুক্তি পান।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরমবুদুরে নির্বাচনী জনসভায় এক আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন নলিনী। প্রথমে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজা হলেও সনিয়া গান্ধীর হস্তক্ষেপে তা কমে যাবজ্জীবন কারাবাস হয়েছিল। শুক্রবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশ শোনার পরে নলিনী প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, ‘‘আমি জঙ্গি নই।’’ শনিবার দিদির মুক্তির পর নলিনীর ভাই বাক্যনাথনের প্রতিক্রিয়া, “৩১ বছর তো জেলেই কেটে গেল। বাকি জীবনটা অন্তত শান্তিতে বাঁচুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy