মানিক সরকার। ফাইল চিত্র।
শেষ পাঁচটি বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর দল লড়াই করেছে তাঁকে সামনে রেখে। দীর্ঘ দিন ধরে ত্রিপুরার সিপিএম এবং তিনি প্রায় সমার্থক! কিন্তু এ বার বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিধানসভা ভোটে তাঁকে আর দলের সেনাপতি হিসেবে দেখা যাবে কি না, উঠে পড়েছে সেই প্রশ্ন। কারণ, নির্বাচনী রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছেন স্বয়ং মানিক সরকার। দল অবশ্য এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
আগামী ফেব্রুয়ারিতেই ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার জন্য রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক প্রস্তুতি চলছে সব শিবিরেই। সিপিএম সূত্রের খবর, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে মানিকবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর অনেক দিন হল সংসদীয় রাজনীতিতে। এ বার অন্য কাউকে সামনে রেখে ভোটের লড়াই হোক। তিনি দলের সৈনিক হিসেবে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর এই মত শুনে সিপিএমের পলিটবুরো অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। ত্রিপুরার রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের মত চাওয়া হয়েছে। সেখানকার রাজ্য কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। তার পরে আগামী ২৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ত্রিপুরা সংক্রান্ত রণকৌশলের সঙ্গে মানিকবাবুকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রশ্নেও ফয়সালা হতে পারে।
সেই আটের দশক থেকে ৭ বার বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন মানিকবাবু। উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন টানা ২০ বছর। বাংলায় দীর্ঘ ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকার নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিদায় নেওয়ার পরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আর ভোটের ময়দানে ফেরেননি। রাজনীতির আঙিনা থেকেও ক্রমে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু মানিকবাবুর পথ ভিন্ন। ত্রিপুরায় বাম সরকার চলে গিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে দলের কঠিন সময়ে তিনিই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৮ সাল থেকে। তবে এখন তাঁর মনে হচ্ছে, এ বার পরবর্তী স্তরের নেতৃত্বকে সামনে এগিয়ে দিয়ে পরামর্শ দেওয়ার কাজে নিজেকে নিযুক্ত করার সময়।
সংসদীয় রাজনীতির পাশাপাশি সিপিএমের সংগঠনেও মানিকবাবু গুরুত্বপূর্ণ নেতা। ত্রিপুরায় দলের রাজ্য কমিটির সদস্য গত ৫০ বছর ধরে। দলের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন মাঝে পাঁচ বছর। পলিটবুরোয় আছেন প্রায় আড়াই দশক। স্বভাবতই তিনি কোনও মত জানালে দলের পক্ষে নাকচ করাও কঠিন। পলিটবুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘উনি তাঁর মত জানিয়েছেন। তবে বিধানসভার ক্ষেত্রে সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন না। ত্রিপুরার রাজ্য কমিটি আগে আলোচনা করে মতামত জানাবে। তার পরে জানুয়ারির শেষে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিষয়টি দেখা হতে পারে।’’
ভোটের আগে দলের কাজকর্ম দেখতে হচ্ছে মানিকবাবুকে। আগরতলার রাস্তায় দুর্ঘটনার জেরে তাঁর স্ত্রী এবং সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পাঞ্চালী ভট্টাচার্য এখনও পূর্ণ সুস্থ নন। এ সবের মাঝেই ভোট থেকে অব্যাহতি সংক্রান্ত প্রশ্নে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না মানিকবাবু। তিনি বলছেন, ‘‘এখন কোনও মন্তব্য করব না। নির্বাচন ঘোষণা হোক। পরে এ সব নিয়ে কথা বলা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy