সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ভার সংসদের হাতে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল কেন্দ্রের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার সংক্রান্ত মামলায় বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (বিসিআই)-র ‘পরামর্শ’ মানল কেন্দ্র। বুধবার কেন্দ্রের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চকে জানিয়েছেন, সমলিঙ্গে বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার মতো ‘অতি জটিল বিষয়’ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার সংসদের হাতে তুলে দেওয়া উচিত সুপ্রিম কোর্টের।
গত রবিবার বিসিআই-এর তরফেও শীর্ষ আদালতের কাছে সমলিঙ্গে বিয়ের মতো ‘স্পর্শকাতর বিষয়ে’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সংসদকে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রথম থেকেই সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাদের মত, এটা নেহাতই ‘শহুরে অভিজাত সমাজের ভাবনা’।
প্রধান বিচারপতি অবশ্য প্রথম থেকেই কেন্দ্রের মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। বলেছেন, ‘‘সমকামিতা যে কেবল শহুরে বিষয়, এমন কোনও পরিসংখ্যান নেই সরকারের কাছে।’’ কখনও বলেছেন, ‘‘সমকামী সম্পর্কগুলি কেবল শারীরিক নয়, মানসিক, স্থিতিশীল সম্পর্কও।’’ আবার কখনও তাঁর মন্তব্য, ‘‘নারী-পুরুষের সংজ্ঞা শুধু মাত্র জননাঙ্গের উপর নির্ভর করে না।’’
২০১৮-র ৬ সেপ্টেম্বর, ভারতীয় সংবিধান থেকে ৩৭৭ ধারাকে সংশোধন করে সমকামিতাকে যে ‘অপরাধ’-এর তকমা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সে কথাও কেন্দ্রকে মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যদি সমকামিতা অপরাধ না হয়, তা হলে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক সমলিঙ্গের মানুষের বিয়ের মতো স্থিতিশীল বন্ধনে আবদ্ধ হতে বাধা কোথায়?’’
সমলিঙ্গে বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি নিয়ে মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘‘বিয়ে সম্পর্কে আমাদের প্রচলিত ধারণাকে নতুন ভাবে সংজ্ঞা দিতে হবে।’’ এই পরিস্থিতিতে বুধবার পঞ্চম দিনের শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘‘আসল প্রশ্ন হল বিয়ে কী এবং কাদের মধ্যে তা নিয়ে কে সিদ্ধান্ত নেবে?’’
এ প্রসঙ্গে শুনানিতে এসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টের প্রসঙ্গ। যাতে বলা হয়েছে, ‘‘পারস্পরিক সম্মতিতে প্রাপ্তবয়স্ক দু’জন মানুষের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হলে তাকে কোনও ভাবেই অপরাধ বলা যাবে না। এ ক্ষেত্রে তাঁদের লিঙ্গ, যৌন পছন্দ, যৌন পরিচয়, বিয়ে, কোনও কিছুই বিবেচ্য নয়।’’ ওই দু’জন বিপরীত লিঙ্গের, সমলিঙ্গের অথবা তাঁদের মধ্যে এক জন বা দু’জন যদি রূপান্তরকামীও হন, তা হলেও যৌন সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মতিতে ঘটলে তা অপরাধ নয় বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy