কেরলে এক কোভিড রোগীর মৃত্যুর পরেই অতিমারি পর্বের স্মৃতি ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে সতর্ক পড়শি রাজ্য কর্নাটকও। সোমবার সে রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও বয়স্কদের মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন। যাঁরা জটিল রোগে আক্রান্ত, তাঁদেরও মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী।
কর্নাটকের কোডাগুতে একটি অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, কোভিড নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কর্নাটকের সিদ্দারামাইয়া মন্ত্রিসভার সদস্যের কথায়, “আমরা কী পদক্ষেপ করব, তা স্থির করতে গত কাল (শনিবার) একটি বৈঠক করেছি। আমরা দ্রুতই নির্দেশিকা প্রকাশ করব। তবে যাঁদের বয়স ৬০ বছরের উপরে, যাঁদের হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা রয়েছে এবং যাঁদের অন্যান্য জটিল রোগ আছে, তাঁরা অবশ্যই মাস্ক পরবেন।”
আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় কর্নাটকের হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে কেরল লাগোয়া জেলাগুলিকে। রোগ নির্ণয় করতে পরীক্ষা বৃদ্ধি করার উপর জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার। মন্ত্রীর আরও পরামর্শ, যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা যেন আগে গিয়ে কোভিড পরীক্ষা করান।
সম্প্রতি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে কেরলে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। কেরলের কান্নুর জেলার পানুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, ৮২ বছরের পালাক্কান্ডি আবদুল্লাহ কাশি এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসে কেরল প্রশাসন। কোভিড নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন স্থানীয় বিধায়ক। সম্প্রতি কেরলে আচমকাই বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড সংক্রমণ। সরকারি হিসাব বলছে, নভেম্বরে কেরলে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭০ জন। ডিসেম্বরের প্রথম ১০ দিনে সে রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২৫ জন।
রাজ্য হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার সাপি পি ওরাথেল জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের পরীক্ষা করে কোভিড ধরা পড়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁদের এইচ১এন১ পরীক্ষা করে রিপোর্ট পজ়়িটিভ আসেনি। তবে কোভিড ধরা পড়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে এক মাস বা তার বেশি সময় ধরে কোভিডের উপসর্গ দেখা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞেরা এ-ও জানিয়েছেন, আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও উপসর্গ গুরুতর নয়। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা একেবারেই নগণ্য।
আরও পড়ুন:
ইন্ডিয়ান সার্স-কোভ-২ (আইএলএসএসিওজি) বলছে, কেরলে জেএন.১ প্রজাতির অস্তিত্ব মিলেছে। সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশেও মিলেছে এই প্রজাতি। করোনা ভাইরাসের বিএ.২.৮৬ ওমিক্রন প্রজাতির একটি উপপ্রজাতি। গত অগস্টে লাক্সেমবার্গে প্রথম এই উপজাতির দেখা মিলেছে। বিএ.২.৮৬ প্রজাতির অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়েছিল গত জুলাই মাসে ডেনমার্কে।