Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
border

LAC: চোখ রাঙাচ্ছে চিন, প্রচারের আলোয় সীমান্তের শেষ গ্রাম কাহো

কিবিথু ব্লকের সাতটি গ্রামের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দিকে ভারতের শেষ গ্রাম কাহো। কাহো থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা।

অরুণাচলের কাহো গ্রাম।

অরুণাচলের কাহো গ্রাম। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

অরুণাচলের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর নিজেদের অবস্থান ও ভৌগোলিক উপস্থিতি আরও বেশি করে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সরকারের পরবর্তী ঘুঁটি কাহো গ্রাম।

বারবার এলএসি অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে চিনের পড়া, অরুণাচলের ভিতরে চিনা গ্রাম তৈরির উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ পাওয়া, সীমান্তের ও-পারে চিনা সমরসজ্জা বাড়ানো ও সৈন্য বহর মোতায়েনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ক্রমশই সংবেদনশীল হয়ে উঠছে অরুণাচল যাকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে চিন।

তারই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে, সাংবাদিক নিয়ে গিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন ভারতের যুদ্ধবহরের কথা ‘ফলাও’ করে দেখিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু সীমান্তে থাকা সেনা ছাউনি সফরে গিয়েছেন। বিবৃতিতে বারবার তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, অরুণাচলের সঙ্গে চিন নয় ‘তিব্বতের সীমান্ত’ রয়েছে। এমনকি তাওয়াং মঠের প্রধান ভিক্ষুর মুখে প্রকাশ্যে সরাসরি চিন বিরোধী মন্তব্যেও ‘প্রশ্রয়’ দিয়েছে সেনা ও সরকার। সম্ভবত সেই পথে হেঁটেই, এ বার সীমান্তে ভারতের শেষ গ্রাম কাহোকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে শুরু হল অভিযান।

কিবিথু হল ভারতের শেষ সেনা ছাউনি। ১৯৬২ সালে, চিন তাওয়াং ভেদ করে তেজপুরমুখী আগ্রাসন চালানোর সময় ভারতীয় সেনা ওয়ালংয়ের যুদ্ধে এই কিবিথুতে চিনা বাহিনীকে প্রায় তিন সপ্তাহ রুখে রেখেছিল। কিবিথু ব্লকের সাতটি গ্রামের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দিকে ভারতের শেষ গ্রাম কাহো। কাহো থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা। ৩০ কিলোমিটার দূরে আছে ভারত-চিন-মায়নামারের ত্রিদেশীয় সীমান্ত দিফু পাস। কাছাকাছি এয়ারস্ট্রিপ রয়েছে ওয়ালংয়ে। লোহিত নদী কিবিথুর গ্রামগুলিকে উত্তর-দক্ষিণে ভাগ করেছে। যাতায়াতের ভরসা ঝুলন্ত সেতু। কাহোর বাসিন্দারা বৌদ্ধ মেয়র জনজাতিভুক্ত।

অরুণাচলের আনজাও জেলার এই কাহো গ্রামের কথা মানুষের কাছে প্রচার করতে রওনা হল সরকারি প্রতিনিধিদল। নেতৃত্বে অরুণাচল তথ্য-জনসংযোগ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর দেনহাং বোসাই। দলটি শনিবার ওয়ালং ও রবিবার কাহো পৌঁছাবে। সরকারি ভাবে অবশ্য বলা হচ্ছে, অরুণাচলের মানুষ নিজেদের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সৌন্দর্য্য, সংস্কৃতি, ভূ-বৈচিত্র্য সম্পর্কে অবহিত নন। তাই কাহোকে রাজ্যের মানুষের কাছে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী কাহোর জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৬৫। কিন্তু সীমান্ত গ্রামগুলিতে জনসংখ্যা বাড়ানোর সরকারি উদ্যোগের হাত ধরে কাহোর জনসংখ্যা এখন প্রায় দেড়শো। গ্রামে নেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল বা মোবাইল সংযোগ। কেন্দ্র যে ‘আজাদি কি অমৃত মহোৎসব’ অভিযান শুরু করেছে- তার অধীনেই অরুণাচল সরকার তাওয়াং ও অন্যান্য সীমান্তবর্তী এলাকায় দেশপ্রেমের বার্তা ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছে।
কাহোর উন্নয়নেও হাতে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু প্রকল্প। বোসাই জানান, রবিবার গ্রামপ্রধানের হাতে তেরঙা তুলে দেওয়ার পরে পতাকা উত্তোলন হবে। তার পর স্থানীয়দের নিয়ে চলবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেয়র জনজাতি নিয়ে একটি বিশদ রিপোর্ট তৈরি করবে প্রতিনিধি দলটি। কাহো ও সেখানকার মানুষদের নিয়ে তৈরি হবে তথ্যচিত্রও।

অন্য বিষয়গুলি:

border Arunachal Pradesh LAC India China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy