অঙ্কিত যাদব যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে সদ্য দেশে ফিরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই পাকিস্তানি ছাত্রীকে দূতাবাসে পৌঁছে দেওয়ার রোমাঞ্চকর ঘটনা।
অঙ্কিত যাদব টুইটার থেকে নেওয়া
মাথার উপর উড়ে বেড়াচ্ছে বোমারু বিমান। মুর্হুমুহু শব্দ হচ্ছে বিস্ফোরণের। সেই সময় কোথায় থাকে বিভেদ চিন্তা! তখন পরস্পরের হাত ধরে বাঁচার রাস্তা খুঁজে বার করাটাই জরুরি কাজ হয়ে দাঁড়ায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে পালিয়ে রোমানিয়ার সীমান্তে পৌঁছতে এক পাকিস্তানি ছাত্রীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন এক ভারতীয় ছাত্র।
অঙ্কিত যাদব যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে সদ্য দেশে ফিরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ওই পাকিস্তানি ছাত্রীকে দূতাবাসে পৌঁছে দেওয়ার রোমাঞ্চকর ঘটনা। তাঁর কথায়, ‘‘২৪ ফেব্রুয়ারি একটি বাঙ্কারে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়। যে বাঙ্কার ভর্তি ছিল ইউক্রেনের বাসিন্দাতে। ভাষাগত বাধার কারণে কারও সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছিল না। ফলে কথা বলার জন্য ওঁকে পেয়ে কিছুটা ভালই লাগছিল। ইউক্রেনের পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় আমরা সিদ্ধান্ত নিই, কিভ ছেড়ে পালাব। কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারি ফের কার্ফু জারি হওয়ার আমরা আটকা পড়ে যাই।’’
পাকিস্তানি ওই ছাত্রীর মতো অঙ্কিতও কিভের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পড়তে ইউক্রেনে গিয়েছিলেন। একটানা গোলাগুলি চলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা হয়েছিল বাঙ্কারের মধ্যে থাকতে। পর্যাপ্ত খাবার নেই। ইউক্রেনীয়রা যে হেতু আমিষ খান, তাই নিরামিষাশী অঙ্কিতের খেতে অসুবিধা হচ্ছিল। অঙ্কিত বলেন,‘‘আমি ২৭ তারিখ নাকের ওষুধ কেনার জন্য বাঙ্কার থেকে বেরোনোর আবেদন করি। বেরিয়ে প্রথম আমি হস্টেলে যাই। দু'জনের জন্য খাবার রান্না করি। রাতে শুধু ভাত ছাড়া আর কিছু জোটেনি।’’
২৮ ফেব্রুয়ারি কার্ফু উঠে গেলে তাঁরা কোনও রকমে বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে আসেন এবং শহর ছেড়ে রোমানিয়া সীমান্তের উদ্দেশ্যে রওনা হন। অঙ্কিত বলেন, ‘‘আমরা যখন শহর ছাড়ছি, তখন পাকিস্তান দূতাবাস থেকে মেয়েটি কাছে ফোন আসে। মেয়েটি জানান, তিনি কিভ শহর রয়েছেন, তাঁর সঙ্গে দেশের কেউ নেই। তখন দূতাবাসের আধিকারিক আমাকে অনুরোধ করেন তাঁকে সীমান্ত পর্যন্ত সঙ্গ দিতে।’’
প্রায় পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে দু’জনে রেলস্টেশনে পৌঁছ্ন। কিন্তু প্রচণ্ড ভিড়ের জন্য পর পর তিনটি ট্রেন ছাড়তে হয়।
অঙ্কিতের কথায়, "শেষ পর্যন্ত আমরা একটি ট্রেনে উঠতে পারি। কিন্তু সেই ট্রেনটিতেও প্রচণ্ড ভিড় ছিল। মেঝেতে বসেই রওনা দিই। মাঝে মাঝে বিস্ফোরণের শব্দ আসছিল। বিস্ফোরণের সময় ট্রেনটির গতি কমে আসছিল। এই ভাবেই আমরা ধীরে ধীরে গন্তব্যে পৌঁছই।’’
তার পর ওই ছাত্রী পাক দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ট্যাক্সি ও বাসের ব্যবস্থা তাঁরাই করে দেন। সেই বাসে করে তিনি অন্য পাকিস্তানি পডুয়াদের সঙ্গে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy