প্রতীকী চিত্র
অরুণাচল প্রদেশকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে ভারত-চিন বাগ্যুদ্ধ।
চার দিন আগেই দু’দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংক্রান্ত সংঘাত নিয়ে সামরিক স্তরে বৈঠক হয়েছে। সেখানে বেজিং যে দিল্লির কোনও প্রস্তাব মানতে চায়নি, তা স্পষ্ট জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। এ বার তার মধ্যে এই নতুন বিতর্ক তৈরি হয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও তেতো এবং সঙ্কটকে আরও গভীর করল বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
এ বারের সমস্যার সূত্রপাত উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর অরুণাচল সফর ঘিরে। ৯ অক্টোবর ওই রাজ্যের বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন নায়ডু। তার পরেই চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বিবৃতি দিয়ে বলেন, “সীমান্ত সম্পর্কে চিনের অবস্থান খুব স্পষ্ট। চিন সরকার কখনও তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশে ভারতের বেআইনি দখলদারিকেকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাই ভারতীয় নেতার সেখানে যাওয়ার দৃঢ় ভাবে বিরোধিতা করা হচ্ছে।”
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এই মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি তাওয়াং এলাকায় ভারত এবং চিনের সেনা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি মিটতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। তার পরেই প্রায় ১০০ জন চিনা সেনা অরুণাচল সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে তাঁদের প্রতিহত করা হয়।
চিনা কর্তার অরুণাচল-মন্তব্যের বিরোধিতা করে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, “চিনের সরকারি মুখপাত্রের মন্তব্য আমরা লক্ষ্য করেছি। এই ধরনের মন্তব্য আমরা খারিজ করছি। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।” তিনি জানান, ভারতীয় নেতারা নিয়মিত ভাবেই অরুণাচল প্রদেশ সফর করেন। ঠিক যে ভাবে তাঁরা অন্যান্য রাজ্যে যান। বাগচীর কথায়, “ভারতের কোনও নেতার ভারতেরই কোনও রাজ্যে সফর করার জন্য দেশবাসীর কাছে কারণ দর্শানোর প্রয়োজন হয় না।” মুখপাত্র জানান, ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিম সেক্টরে বর্তমানে যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার কারণ চিনা সেনার বার বার স্থিতাবস্থা ভেঙে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অমান্য করে অনুপ্রবেশ করা। তিনি বলেন, “সেই কারণেই আমরা চাই, চিন পূর্ব লাদাখের বকেয়া সমস্ত বিবাদের দ্রুত নিষ্পত্তি করুক।”
সম্প্রতি দু’দেশের সেনা স্তরে বৈঠকের পরে বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পশ্চিম সেক্টরে শান্তি এবং সংহতি বজায় রাখতে চিনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা জরুরি। গত মাসে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী এসসিও পার্শ্ব বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন এবং সহমত হন যে, দ্রুত বকেয়া বিষয়গুলি মিটিয়ে ফেলতে হবে। ভারত জোর দিয়ে বলেছে, ভূখণ্ড থেকে সেনা সরানো সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এ দিনও অরিন্দম বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছিলাম, চিন একতরফা ভাবে সীমান্তে স্থিতাবস্থা ভঙ্গ করেছে এবং আমরা যা পরামর্শ দিয়েছি, তা শুনতে রাজি হয়নি। এখনও আশা করছি, তারা দ্রুত সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে পদক্ষেপ করবে। সীমান্তে শান্তি ও সুস্থিতি না থাকলে, তার প্রভাব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে পড়বে।’’ কূটনীতিকদের মতে, সীমান্তের পরিস্থিতি না বদলালে যে তার প্রভাব বাণিজ্যেও পড়বে, তা আরও স্পষ্ট করে দিতে চাইছে ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy