Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
India-China

লাদাখ নিয়ে বার্তা দিতে সেনা-বৈঠকে আমলাও

লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে এ যাবৎ পাঁচটি সেনা কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক করেছে ভারত।

লে-র আকাশে রাফাল। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

লে-র আকাশে রাফাল। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১০
Share: Save:

লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে প্রায় দেড় মাস পর ফের বৈঠকে বসল ভারত-চিন। আজ নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে, চিনা এলাকা মলডোয় হওয়া ওই বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জে কে মেনন। মূলত লাদাখ সীমান্তে সেনা কমানোর মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমন করা, প্যাংগং এলাকায় টহলদারি প্রোটোকল তৈরি করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে আজ সকাল থেকে আলোচনা শুরু হয় দু’পক্ষের। যা চলে রাত পর্যন্ত।

লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনা কমাতে এ যাবৎ পাঁচটি সেনা কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক করেছে ভারত। কিন্তু আজকের ষষ্ঠ বৈঠকের তাৎপর্য হল, ওই বৈঠকে সেনা কর্তাদের সঙ্গেই উপস্থিত থাকেন বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য হল, সামরিক স্তরের বৈঠকের মধ্যে সাধারণ ভাবে কখনও কূটনৈতিক প্রতিনিধি উপস্থিত থাকেন না। সাধারণত বৈদেশিক কোনও সঙ্কটে হয় একেবারেই কূটনৈতিক স্তরে বৈঠক হয়। অথবা সমান্তরাল ভাবে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হচ্ছিল। কিন্তু ১০ সেপ্টেম্বর মস্কোয় দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকে যে পাঁচ দফা ঐকমত্য হয়, তাতে একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামরিক— এই দুই স্তরে বোঝাপড়ার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।

তা ছাড়া নয়াদিল্লি এটা ভাল ভাবেই জানে যে, শুধু মাত্র চিনা সেনার আশ্বাস পেলেই লাদাখ সঙ্কট মিটবে না। শীর্ষ স্তরের রাজনৈতিক নির্দেশিকাকে চিনা সেনার সামনে তুলে ধরাটাও ততোধিক জরুরি। সে কারণেই দু’দলের সেনার এই বৈঠকে জয়শঙ্কর তাঁর প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছেন। তবে কূটনৈতিক সূত্র মনে করছে, এই এক বৈঠকেই মীমাংসা সূত্র বেরিয়ে আসবে, এমন ভাবা বাতুলতা। সর্বাত্মক ভাবে চিনের উপর চাপ বজায় রেখেই যেতে হবে। সামরিক চাপের পাশাপাশি রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক ভাবেও বেজিংকে যথাসম্ভব চাপে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সূত্রের মতে, আজকের আলোচনা তালিকায়, প্যাংগং লেক সন্নিহিত পাঁচ নম্বর ফিঙ্গার থেকে আট নম্বর ফিঙ্গার (গিরিশিখর) পর্যন্ত ভারত যাতে আগের মতোই টহল দিতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। গত এপ্রিল পর্যন্ত ওই এলাকায় ভারতীয় বাহিনী টহল দিলেও বর্তমানে তা চিনের দখলে। যা নিয়ে চিনের সঙ্গে ভারতের লড়াই চলছে বলে সংসদে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেনা সূত্রের মতে, এ ছাড়া ডেপসাং এলাকায় চিনা সেনার উপস্থিতির কারণে দৌলত–বেগ ওল্ডি রোডে ভারতীয় সেনার টহল দিতে যে সমস্যা হচ্ছে, তা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা বৈঠকে।

আরও পড়ুন: মোদীর আশ্বাস, ঘোষিত সহায়ক মূল্যও

আরও পড়ুন: গাঁধীমূর্তির নীচে ধর্না সারা রাত

গত পাঁচটি আলোচনার মতোই আজকের বৈঠকে সীমান্তে সেনা সংখ্যা কমানোর মতো বিষয় থাকলেও দু’পক্ষই নিশ্চিত, আসন্ন শীতের আগে কোনও ভাবেই লাদাখ সীমান্তের সমস্যা মিটছে না। তাই দু’পক্ষই আসন্ন শীতে লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বসে থাকার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে। প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, শীতের সময় প্রবল বরফের মধ্যে সীমান্ত এলাকায় টহল দেওয়া ও ফরওয়ার্ড ছাউনিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিতে প্রয়োজনে উটের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) জানিয়েছে, লাদাখের ওই স্থানীয় উটগুলিতে দু’টি কুঁজ থাকে। তাই এদের ডাবল হাম্প বা ব্যাকট্রিয়ান ক্যামেল বলা হয়। স্থানীয় ওই উটগুলি লাদাখের চরম প্রাকৃতিক পরিবেশেও ১৭০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজন নিয়ে চলতে সক্ষম। প্রয়োজনে এক টানা ১২ কিলোমিটার চলতে পারে তারা। চরম পরিস্থিতিতে জল ও খাবার ছাড়া প্রায় তিন দিন বেঁচে থাকতে পারে ওই উটগুলি। প্রতিরক্ষাসূত্রে বলা হয়েছে, ওই উটগুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। খুব দ্রুত তাদের সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যাতে শীতের সময়ে টহলদারিতে সমস্যা না হয়। ভবিষ্যতের সীমান্তরক্ষার প্রশ্নে ওই উটগুলির চাহিদা বাড়তে পারে ধরে নিয়ে প্রজননের মাধ্যমে এদের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে সেনা।

অন্য বিষয়গুলি:

India-China Ladakh India China Border
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy