—প্রতীকী ছবি।
প্রায় তিন মাস ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। যার জেরে দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সেই আবহেই নতুন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্র। এখন থেকে মায়ানমার থেকে ভারতে প্রবেশ করা শরণার্থীদের ‘বায়োমেট্রিক’ (বায়োমেট্রিক হল মানুষের শারীরিক বা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শনাক্তকরণ পদ্ধতি। মূলত আঙুলের ছাপ, মুখ, আইরিস, কন্ঠস্বর, ডিএনএ, হাতের ছাপ এবং স্বাক্ষর দিয়ে বায়োমেট্রিক করা হয়) তথ্য সংগ্রহ করবে সরকার! এমনটাই জানা গিয়েছে সরকারি সূত্রে। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ানমার থেকে আগত শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক তথ্য থেকে বিশেষ একটি তালিকা তৈরি করা হবে। সেই তালিকা ঠিক করা দেবে, কাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এবং কাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
পাশাপাশি ভারত-মায়ানমার সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজও জোর কদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত, মণিপুর-মিজোরাম সীমানার প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। সীমানায় বেড়া তৈরির দায়িত্ব যে সংস্থাগুলিকে দেওয়া হয়েছে, তাদের যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। সে দিন রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। তার মধ্যেই গত ৪ মে মণিপুরে দুই কুকি মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো এবং গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। মণিপুরে গত পৌনে তিন মাসের হিংসাপর্ব, দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়ো (যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি) এবং গণধর্ষণের অভিযোগ নিয়েও তোলপাড় শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
মেইতেই সম্প্রদায়ভুক্তেরা বহু দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে, কুকিরা মায়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে অবৈধভাবে সে রাজ্যে অনুপ্রবেশ করছে এবং মণিপুরের বনাঞ্চলে বসতি তৈরি করছে। আর তাই জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বাস্তবায়নের দাবিতেও তাদের বেশ কয়েকটি সংগঠন চলতি বছরের মার্চ মাসে দিল্লির যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছিল।
সম্প্রতি, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সরকারও জানিয়েছিল, জুলাই মাসে মায়ানমার থেকে ৭০০-রও বেশি মানুষ অবৈধ ভাবে সে রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেছেন। মণিপুরের সরকার আরও জানিয়েছিল, রাজ্যের বর্তমান আইনশৃঙ্খলার কথা মাথা রেখে অনুপ্রবেশের ঘটনাগুলিতে অত্যন্ত সংবেদনশীল ভাবে পদক্ষেপ করা হবে।
অন্য দিকে, কুকিদের যুক্তি, অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশের কথা বলে তাদের সে রাজ্য থেকে উৎখাতের প্রচেষ্টা চলছে। নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট নথি রয়েছে বলেও তারা দাবি করেছে। এই নিয়ে দুই জনজাতির মধ্যে তরজা বহু দিন ধরেই চলছে। মেইতেই এবং কুকিদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে ইতিমধ্যেই দুই জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলির মধ্যে ‘বাফার জোন’ তৈরি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার নিরাপত্তা বাহিনী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy