Advertisement
E-Paper

‘জামাই সর্বস্ব দিয়ে ভালবেসেছিল’, মার্চেন্ট নেভি অফিসারের শ্বশুর ও শাশুড়ি চান মেয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি

মেরঠের মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুন করে ১৫ টুকরো করেন তাঁর স্ত্রী এবং স্ত্রীর প্রেমিক। প্রমাণ লোপাট করতে দেহের টুকরো ড্রামে ভরে উপরে সিমেন্ট দিয়ে দেন তাঁরা।

মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন স্ত্রী মুস্কান রস্তোগী।

মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুনের কথা স্বীকার করেছেন স্ত্রী মুস্কান রস্তোগী। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫ ১৭:৩৩
Share
Save

৬ বছরের মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুত। প্রেমিকের সাহায্য নিয়ে তাঁকে খুন করে ১৫ টুকরো করেছেন স্ত্রী মুস্কান রস্তোগী। স্বামীর দেহ টুকরো করে ড্রামে ভরে অটো করে ফেলতে গিয়েছিলেন তাঁরা। ওই ঘটনায় মেয়ের ফাঁসি চান মুস্কানের মা-বাবা। তাঁরা জানান, জামাইকে খুনের অপরাধে মেয়েকে সর্বোচ্চ সাজা দিক আদালত।

উত্তরপ্রদেশের মেরঠের বাসিন্দা সৌরভ ২০১৬ সালে প্রেম করে বিয়ে করেন মুস্কানকে। স্ত্রীকে সময় দিতে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। তা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঝগড়া করেন। স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ভাড়া করে অন্যত্র থাকছিলেন। কন্যা হওয়ার পরে সংসারের জন্য আবার নেভির চাকরি নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন। এ-হেন সৌরভ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি লন্ডন থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন। তাঁদের মেয়ের জন্মদিন ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। তাঁর কয়েক দিন পরে তিনি খুন হন। অভিযোগ, স্ত্রী এবং স্ত্রীর প্রেমিক (তিনি সৌরভের বন্ধুও বটে) সাহিল তাঁকে খুন করে ১৫ টুকরো করেন। তার পর প্রমাণ লোপাট করতে দেহের টুকরো প্লাস্টিকের ড্রামে ফেলে উপরে সিমেন্ট দিয়ে এঁটে দেন।

খুনের পর মানালি চলে গিয়েছিলেন মুস্কান এবং সাহিল শুক্ল। মেরঠে ফেরার পর তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্বামীকে খুন করার জন্য মেয়ের কড়া শাস্তি চান মুস্কানের বাবা প্রমোদকুমার রস্তোগী এবং মা কবিতা রস্তোগী। তাঁদের কথায়, ‘‘যে ছেলে অন্ধের মতো ভালবাসত, তাকে খুন করার জন্য ওর (মুস্কান) যেন ফাঁসি হয়।’’ কবিতা জানান, জামাইকে খুনের কথা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন মেয়ে। তাঁকে সে কথা জানাতেই মেয়েকে পুলিশে ধরিয়ে দেন তাঁরা। মুস্কানের মায়ের কথায়, ‘‘সমস্যা আমার মেয়েরই। প্রথমে জামাইকে তার পরিবার থেকে আলাদা করল। তার পর এই ঘটনা ঘটাল।’’ ওই দম্পতি জানান, তাঁরা দু’জনেই সৌরভের পরিবারের পাশে রয়েছেন। দোষীদের শাস্তি চান।

মুস্কান ও তাঁর প্রেমিক সাহিল পুলিশকে জানিয়েছেন, গত ৪ মার্চ সৌরভের খাবারে তাঁরা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। খাওয়াদাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে সৌরভ ঘুমিয়ে পড়লে সাহিল তাঁকে ছুরি দিয়ে খুন করেন। তার পর দেহ টুকরো টুকরো করে ড্রামে ভরেছিলেন। মুস্কানের বাবা-মা বলেন, ‘‘ও (সৌরভ) আমাদের মেয়ের জন্য অনেক করেছে। নিজের বাবা-মাকে ছেড়ে, কোটি টাকার সম্পত্তি ত্যাগ করে ভাড়াবাড়িতে থেকেছে। চাকরি ছেড়েছিল। আবার চাকরি করতে দেশের বাইরে গিয়েছিল। আর সেই ছেলেকে কিনা মেয়ে খুন করল! সৌরভ আমাদের ছেলের মতো। এমন অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই। মেয়ের শাস্তি হোক।’’

মুস্কানের বাবা-মা জানিয়েছেন, তাঁদের মেয়ের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। সৌরভ দেশে ফিরলে ইচ্ছামতো সব কিছু করা হত না, এই ভয় পেয়েছিলেন মুস্কান। এমনকি মেয়ে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন বলেও অভিযোগ তাঁদের। মুস্কানের বাবা বলেন, ‘‘এক বার ও (মেয়ে) আমাদের বলেছিল যে ওর বন্ধু (সাহিল) ভয় পাচ্ছে সৌরভ ফিরে এলে তাদের নেশা করা বন্ধ হয়ে যাবে।’’ মুস্কানের মা জানান, তাঁর মেয়েকে ভীষণ ভালবাসতেন জামাই। সব সময়ে মুস্কানের পাশে দাঁড়িয়েছেন সৌরভ। কিন্তু তাঁদের মেয়ে সৌরভকে ভালবাসেনি। কবিতা বলেন, ‘‘সৌরভ তখন লন্ডনে। মেয়ের ১০ কেজি ওজন কমে গিয়েছিল। আমরা ভেবেছিলাম, ও অসুস্থ। কিন্তু স্বামীর বিদেশে থাকার সুযোগে মাদকের নেশায় জড়িয়ে নিজের সর্বনাশ করেছে। সংসারটাও শেষ করে দিল।’’ সৌরভ-মুস্কানের ৬ বছরের মেয়ে এখন রস্তোগী দম্পতির কাছে। তাঁদের ইচ্ছা, নাতনিকে বড় করবেন। মানুষ করবেন।

Murder Case Wife kills Husband UP Police Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy