সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার সংক্রান্ত মামলায় এ বার কেন্দ্রকে নতুন প্রশ্ন করল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার মামলার ষষ্ঠ দিনের শুনানিতে বেঞ্চ জানতে চেয়েছে, সমলিঙ্গে বিয়ে আইনি স্বীকৃতি না পেলে সমকামী দম্পতির সামাজিক পরিচয় কী হবে?
এই মামলার শুনানিতে বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছিলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের উচিত, সমলিঙ্গে বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার মতো ‘অতি জটিল বিষয়’ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার সংসদের হাতে তুলে দেওয়া।’’ সমলিঙ্গের বিয়েকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে সংসদের অধিকারের কথা মেনে নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সরকারের উচিত সমকামী দম্পতিদের যৌথ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার বা বিমায় অংশীদার মনোনীত করার মতো মৌলিক এবং সামাজিক অধিকার দেওয়ার উপায় খুঁজে বার করা।’’
আরও পড়ুন:
সমলিঙ্গে বিবাহের স্বীকৃতি এবং সুরক্ষার পক্ষে বৃহস্পতিবার আবার পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বলেছে, ‘‘সমকামী সম্পর্ক আইনি স্বীকৃতি না পেলে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’ যদিও বুধবার সলিসিটর জেনারেল এ বিষয়ে আপত্তির কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমি লিঙ্গ পরিচিতি (জেন্ডার), জৈবিক লিঙ্গ পরিচয় (সেক্স), লিঙ্গ সত্তা (জেন্ডার আইডেন্টিটি) এবং যৌন রুচির (সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেশন) তফাত সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। তার মধ্যে ঢুকছি না। কিন্তু ভারতের সমস্ত আইন নারী এবং পুরুষের সনাতনী সংজ্ঞাই ব্যবহার করেছে।’’
সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আসল প্রশ্নটা হল, বিবাহ কাকে বলে এবং কাদের মধ্যে হবে, সেটা কে ঠিক করবে?’’ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে কী কী ধরনের প্রশ্ন উঠতে পারে, তার তালিকা দিয়ে এবং হিন্দু বিবাহ আইন প্রণয়নের সময়কার উদাহরণ টেনে তিনি বিষয়টা আইনসভার হাতে ছাড়ার ব্যাপারেই সওয়াল করেছিলেন। মেহতার দাবি ছিল, যখনই একটা দাম্পত্য আইনি স্বীকৃতি পাবে, তার সঙ্গে অজস্র নিয়মবিধির প্রশ্ন জড়িয়ে যাবে। একমাত্র সংসদই তা সামগ্রিক ভাবে ভেবে দেখতে পারে, আদালত নয়।
সলিসিটর জেনারেলের ওই সওয়াল প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন— ‘‘সমলিঙ্গে বিয়ের আইনি স্বীকৃতির প্রশ্নটি এ বার সংসদের আলোচ্য বিষয় হতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল, সরকার বিষয়টি নিয়ে কী চায়? সামাজিক নিরাপত্তা দিতে? এই ধরনের সম্পর্ক যাতে বিচ্ছিন্ন না হয় তা নিশ্চিত করতে?’’