বাবা সিদ্দিকি। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি (একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠী) নেতা বাবা সিদ্দিকিকে খুন করলেই মিলবে ২৫ লক্ষ টাকা। শুধু তা-ই নয়, গাড়ি এবং ফ্ল্যাটও পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে দুবাইয়ে ঘুরতে যাওয়ার বন্দোবস্তও করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সিদ্দিকি-খুনে চার অভিযুক্তকে জেরা করে এমনই তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
গত ১২ অক্টোবর পুত্র জিশানের কার্যালয়ের সামনেই আততায়ীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান সিদ্দিকি। সেই খুনের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির নাম জড়ায়। এখনও পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, কোনও না কোনও ভাবে সিদ্দিকি খুনের সঙ্গে জড়িত তাঁরা। কেউ অস্ত্র সরবরাহ করেছেন, কেউ আবার শুটারদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। কেউ আবার শুটারদের জন্য বাইকের ব্যবস্থা করেছেন। সিদ্দিকিকে খুন করতে বেশ কয়েকটি বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল বলে দবি পুলিশের। তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, সিদ্দিকিকে খুন করতে প্রথমে বেশ কয়েক জন শুটারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু পরে ‘মাস্টারমাইন্ড’ তিন জন শুটারকে বেছে নেয় খুনের জন্য। তাঁদের মধ্য দু’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি এক জন অধরা।
খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অক্টোবরে রামফুলচাঁদ কানোজিয়াকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছে তিনিই অন্য চার অভিযুক্ত— রূপেশ মহল, শিবম খোয়াড়, কর্ণ সালভে এবং গৌরব আপুনকে নিযুক্ত করেছিলেন। তাঁদের ২৫ লক্ষ টাকা, ফ্ল্যাট, গা়ড়ি এবং দুবাই ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। চার অভিযুক্ত জেরায় পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, রামফুলচাঁদকে টাকা পাঠাতেন জ়িশান আখতার। খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জ়িশান এখনও পলাতক। পঞ্জাবের জলন্ধরের বাসিন্দা জ়িশানের ১০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে। সেই অ্যাকাউন্টগুলি থেকেই লেনদেন হয়েছে বলেও দাবি পুলিশের।
প্রসঙ্গত, খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বুধবার পুণে থেকে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদিত্য গুলাঙ্কর এবং রফিক শেখ। তদন্তকারী জানিয়েছেন, দু’জনেই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। পুণের উপকণ্ঠে এক জায়গায় অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল আদিত্যকে। প্রথমে যে হেতু সিদ্দিকিকে খুন করতে বেশি সংখ্যক শুটারের কথা ছিল তাই আদিত্যদের তৈরি করা হয়েছিল। সিদ্দিকি-খুনে ধৃত প্রবীণ লোঙ্কারের সঙ্গেই মূলত যোগাযোগ হয়েছিল আদিত্য এবং রফিকের। তার পর রুপেশের সঙ্গে আলাপ। তাঁর থেকেই পিস্তল এবং গুলি পেয়েছিলেন রফিকেরা।
সিদ্দিকি-খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়ে বিশ্নোই গ্যাংয়ের। এই দলের সর্বের্সবা লরেন্স বিশ্নোই এবং তাঁর ভাই আনমোল খুনের ঘটনায় জড়িত রয়েছেন বলে দাবি করে মুম্বই পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ঘটনায় যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে বিদেশ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন আনমোল। ‘স্ন্যাপচ্যাটে’ তার প্রমাণও মিলেছে। সূত্রের খবর, ভাড়া করা আততায়ীদের সিদ্দিকি ও তাঁর পুত্র জ়িশানের ছবিও পাঠিয়েছিলেন আনমোল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy