ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নতুন করে বাজেটের অঙ্ক কষতে হবে বলে মত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের।
দু’মাস আগে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট পেশের আগে আর্থিক সমীক্ষায় পূর্বাভাস করা হয়েছিল, আগামী আর্থিক বছর, ২০২২-২৩-এ আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ ছোঁবে। তার আগে সরকারের পূর্বাভাসে ৯ থেকে ৯.৫ শতাংশ বৃদ্ধিরও পূর্বাভাস করা হয়েছিল। আজ রাজ্যসভায় অর্থ বিল নিয়ে আলোচনার সময় কংগ্রেস নেতা চিদম্বরম বলেন, ‘‘আমি সরকারকে সতর্ক করছি, ৮, ৯ বা ৯.৫ শতাংশ বৃদ্ধি হবে না। গোটা বিশ্বে টালমাটাল চলছে। আইএমএফ সব দেশের আর্থিক বৃদ্ধি সম্পর্কেই পূর্বাভাস শুধরে ০.৫ থেকে ২ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছে। আমাদের আর্থিক বৃদ্ধি কম হবে। কিন্তু সেই কম মাত্রার আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যও ছোঁয়া দরকার।’’
বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনতে তিনি বিপুল পরিমাণে খরচ করছেন। আজ চিদম্বরম একদিকে পরিকাঠামোয় খরচের বহরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যদিকে, বেসরকারি লগ্নিকারীদের উপরে সরকার আস্থা হারিয়েছে, না কি বেসরকারি লগ্নিকারীরা ভারতে বিনিয়োগে আস্থা হারাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। সীতারামন বাজেটে বলেছিলেন, সরকার পরিকাঠামোয় ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করবে। চিদম্বরমের বক্তব্য, এর মধ্যে ১ লক্ষ কোটি টাকা রাজ্যগুলিকে ঋণ দেওয়া হবে। রাজ্যগুলি ঋণ নিয়ে পরিকাঠামোয় খরচ করলে তা রাজ্যের খরচের খাতায় যোগ হবে। একই খরচ কী ভাবে একই সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যের খাতায় থাকতে পারে? বাস্তবে কেন্দ্রের খরচ ৬.৫ লক্ষ কোটি টাকা। যা চলতি বছরের তুলনায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বেশি। এতে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে না। তার জন্য বেসরকারি লগ্নি প্রয়োজন। চিদম্বরমের মতে, বেসরকারি সংস্থা, গৃহস্থকে আরও বেশি সঞ্চয়ে উৎসাহিত করে তা শিল্পে লগ্নির জন্য কাজে লাগানোর রাস্তা খুঁজতে হবে।
বাজেটে বলা হয়েছিল, আগামী অর্থ বছরে মূল্যবৃদ্ধি-সহ আর্থিক বৃদ্ধির হার ১১.২ শতাংশ ছোঁবে। চিদম্বরমের প্রশ্ন, সেক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধির হার ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে থাকবে ধরে নেওয়া হয়। ফেব্রুয়ারিতে ১৩.১ শতাংশ পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি, ৬.১ শতাংশ খুচরো মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যপণ্য, কারখানার পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশ ছিল। তা হলে কীভাবে মূল্যবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশর মধ্যে থাকবে বলা যায়?
মোদী সরকারের কর নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চিদম্বরম। তাঁর বক্তব্য, গত পাঁচ বছর ধরে মোদী সরকার আয়কর, কর্পোরেট কর থেকে ঘরে কম অর্থ তুলছে। পরোক্ষ কর, যার বোঝা ধনী-গরিব, সকলকেই বইতে হয়, সেখান থেকে কম টাকা ঘরে তুলছে। এর ফলেই দেশে আর্থিক বৈষম্য বাড়ছে। এতদিনে তা একই জায়গায় এলেও সামগ্রিক ভাবে কর আদায়ের পরিমাণ জিডিপি-র তুলনায় খুবই কম। চিদম্বরম বলেন, ‘‘জিডিপি-র তুলনায় কর আদায়ের পরিমাণ না বাড়ার অর্থ, ধনীরা অর্থ-সম্পদ জমা করছে। যথেষ্ট পরিমাণে কর দিচ্ছেন না। সাধারণ মানুষ করের বোঝা বহন করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy