Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
national news

কংগ্রেস আড়ি পেতেছিল বিধায়কদের ফোনে? সিবিআই তদন্ত দাবি বিজেপির

গত কালই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত সরকারের পুলিশ মোদী সরকারের এক মন্ত্রীর নাম জড়িয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে।

কার সঙ্গে ফোনে কথা সচিন পাইলটের? -ফাইল ছবি।

কার সঙ্গে ফোনে কথা সচিন পাইলটের? -ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ১২:৫৬
Share: Save:

রাজস্থানে বিধায়কদের ফোনে গোপনে আড়ি পেতেছিল মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সরকার— বিজেপির তরফে শনিবার এই অভিযোগ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানানো হয়েছে। আড়ি পাতার আগে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) মানা হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে।

এ দিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির তরফে বলা হয়, ‘‘আমরা এই গুরুত্বপুর্ণ প্রশ্নগুলিই করতে চাই কংগ্রেস হাইকম্যান্ড ও অশোক গহলৌতকে। বিধায়কদের ফোনে কি গোপনে আড়ি পাতা হয়‌েছিল? সেই আড়ি পাতার সময় কি এসওপির নিয়মকানুন মেনে চলা হয়েছিল? এটা রাজস্থানের মানুষ জানতে চান। তাঁরা জানতে চান, তাঁদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হয়েছে কি না।’’

গত কালই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত সরকারের পুলিশ মোদী সরকারের এক মন্ত্রীর নাম জড়িয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে। গ্রেফতার করা হয় বিজেপি ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীকে।

রাজস্থানের সরকার ফেলতে আর্থিক লেনদেন নিয়ে কথাবার্তার একাধিক অডিয়ো গত রাতেই সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজস্থানের বিজেপি নেতা, তথা কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত সচিন পাইলট ও তাঁর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে মিলে গহলৌত সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র করছিলেন। ওই অডিয়ো টেপই তার প্রমাণ। কংগ্রেসের দাবি, শেখাওয়াত মন্ত্রী পদের অপব্যবহার করে তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারেন বলে আশঙ্কা থাকলে তাঁকে গ্রেফতার করা হোক। ওই টেপে সঞ্জয় জৈন নামে যে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর কণ্ঠ শোনা গিয়েছে বলে অভিযোগ, কাল বেশি রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন: রাজ্যে এক দিনে সংক্রমিত ১ হাজার ৮৯৪, বাড়ল সংক্রমণের হার

আরও পড়ুন: তিন দিনে এক লাখ করোনা রোগী! দিশা কোথায়, প্রশ্ন উঠছে ১০ লক্ষ ছুঁয়ে​

কংগ্রেস সূত্র অবশ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত যে সব অডিয়ো টেপ প্রকাশ্যে এসেছে, তা শুধুই ‘ট্রেলার’। আসল অডিয়ো এখনও আসা বাকি। গহলৌত আগেই দাবি করেছিলেন, সচিন যে বিজেপির সঙ্গে টাকার লেনদেন করছেন, তার প্রমাণ রয়েছে।

এখনও পর্যন্ত যে সব অডিয়ো টেপ এসেছে, তা শুনিয়ে কংগ্রেসের যুক্তি, গজেন্দ্র সঞ্জয় জৈন নামে এক ‘বিজেপি-ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ীর মাধ্যমে কংগ্রেস বিধায়ক ভাঁওয়ার লাল শর্মা, বিশ্বেন্দ্র সিংহর সঙ্গে রফা করছিলেন। ভাঁওয়ারলাল আগেও সরকার ফেলায় খেলায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। জনতা দল, বিজেপি ঘুরে তিনি কংগ্রেসে আসেন। কংগ্রেস বিশ্বেন্দ্র ও ভাঁওয়ারলালকে আজ সাসপেন্ড করেছে। দলের নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, “আজ গণতন্ত্রের কালো দিন। বিজেপি যে নির্বাচিত সরকার ফেলার চেষ্টা করে, তা প্রমাণিত।”

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের দাবি, ওই অডিয়ো টেপে তাঁর কণ্ঠস্বর নেই। তিনি মারওয়াড়ের টানে রাজস্থানি বলেন। অডিও টেপের কথায় অন্য টান রয়েছে। গজেন্দ্র লোকসভা ভোটে গহলৌতের ঘরের মাঠ যোধপুরে তাঁর ছেলে বৈভবকে হারিয়ে সাংসদ হয়েছিলেন। তাঁর দাবি, “আমি যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে তৈরি।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি সতীশ পুনিয়ার অভিযোগ, সমস্ত অডিয়ো জাল। কংগ্রেস গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার হয়ে বিজেপিকে দুষছে। পুলিশের এসওজি-র এডিজি অশোক রাঠৌর বলেন, “দু’টি এফআইআর দায়ের হয়েছে। ওই অডিয়োয় কথাবার্তার সত্যতার তদন্ত হবে।”

ও দিকে, পর্যবেক্ষকদের মতে, এর পর সচিনের পক্ষে আর কংগ্রেসে থেকে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে বিজেপি-তে যাওয়ার রাস্তাও কতটা মসৃণ হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার আপত্তি। এ দিকে, সচিন ও তাঁর অনুগামীদের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে স্পিকার নোটিস পাঠিয়েছিলেন। সচিনদের জন্য স্বস্তির খবর, রাজস্থান হাইকোর্ট মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সেই নোটিসে জবাবদিহির সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছে।

স্পিকারের নোটিসের বিরুদ্ধে সচিনরা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। সচিনের আইনজীবী হরিশ সালভে লন্ডন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে শুনানিতে সওয়াল করেছেন, সচিনরা কংগ্রেস দল ছাড়েননি। ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বাক‌স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। সোমবার থেকে ফের শুনানি হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE