কখনও কাঁধে বন্দুক, কখনও আবার মুঠো ভর্তি বুলেট! ইনস্টাগ্রামে ‘শের_কি_শেরনি’ নামে বেশ জনপ্রিয় ছিল বছর বাইশের জ়িকরার অ্যাকাউন্টের এমন নানা ছবি-ভিডিয়ো। গত বৃহস্পতিবার সিলামপুরে এক বছর সতেরোর কিশোরকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুনের ঘটনার তদন্তে গ্রেফতার হল সেই জ়িকরা-ই। ‘লেডি ডন’ নামে পরিচিত জ়িকরার অ্যাকাউন্টটি আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
তবে এই প্রথম নয়। বেআইনি অস্ত্র নিয়ে ছবি সমাজমাধ্যমে দেওয়ার অভিযোগে মাত্র দিন দশেক আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল জ়িকরাকে। জানা গিয়েছে, বছর বাইশের জ়িকরা দিল্লির মস্তান গ্যাং-এর সদস্য। স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পরে বছর দুয়েকের সন্তানের সঙ্গে থাকে সে। এক সময় গ্যাংস্টার হাসিম বাবার স্ত্রী জ়োয়ার বাউন্সার হিসেবে কাজ করত। একটি মাদক সংক্রাম্ত মামলায় জ়োয়া গ্রেফতার হওয়ার পরে অন্যত্র কাজে যোগ দেয়। কয়েক দিন আগে মস্তান গ্যাং-এর মাথা শোয়েব মস্তানের সঙ্গে মিলে দিল্লির কিছু জায়গায় ডাকাতি-সহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছিল জ়িকরার বিরুদ্ধে। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বছর সতেরোর কুণালকে কুপিয়ে খুন করার ঘটনার সঙ্গে জ়িকরার নাম জড়ানোর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়ে পড়েছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর-পূর্ব দিল্লির বাসিন্দা কুণাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল বাবার জন্য দুধের প্যাকেট কিনতে। তবে কিছু দূর যাওয়া মাত্র কিছু দুষ্কৃতী তার শরীরে এলোপাথাড়ি ছুরির কোপ বসায়। রক্তাক্ত অবস্থায় কুণালকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
কুণালের হত্যার ঘটনার পর থেকেই প্রতিবাদ শুরু করেছেন স্থানীয়েরা। জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে জ়িকরার ভাই সাহিলকে মারধর করেছিল কুণালের গোষ্ঠীর কিছু লোকজন। ঘটনার জেরে খুনের চেষ্টার মামলাও রুজু হয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। তবে এর পর থেকেই পিস্তল হাতে এলাকায় ঘুরে বেড়াত জ়িকরা। বৃহস্পতিবার সকালে কুণালকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। সাহিলকে মারধর করার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই কুণালকে খুন করা হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জ়িকরা যে অন্তত ১০-১২ জন যুবককে নিয়ে নিজের গ্যাং খোলার চেষ্টা করছিল, তদন্তে তা জেনেছে পুলিশ। ওই যুবকদের নাম কুণাল-হত্যার সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ার পরেই জ়িকরাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)