পুরনগিম পরিচালিত স্কুলে দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা।
স্কুলের গেট থেকে শুরু করে স্কুল চত্বরের ভিতরে সর্বত্র ছড়ানো ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, মদের বোতল, গুটখার মোড়ক। দিল্লি পুরনিগম পরিচালিত চারটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে এই পরিস্থিতি দেখে চমকে উঠেছিলেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। স্কুল না কি দুষ্কৃতীদের ‘আড্ডাক্ষেত্র’!
সম্প্রতি পুরনিগম পরিচালিত একটি স্কুলে এক ছাত্রীর যৌন হেনস্থার ঘটনার পরই স্কুলগুলি পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয় মহিলা কমিশন। উত্তর এবং পূর্ব দিল্লির চারটি স্কুলে যান তাঁরা। সেই স্কুলগুলি হল— ভাই মনদীপ নাগপাল নিগম বিদ্যালয়, নিগম প্রতিভা শাহ শিক্ষা বিদ্যালয়, পূরবী দিল্লি নগর নিগম প্রতিভা বিদ্যালয়, দক্ষিণী দিল্লি নগর নিগম প্রাথমিক শাহ বাল বালিকা বিদ্যালয় এবং ভাটি মাইনস।
স্কুলগুলি যে রাতে দুষ্কৃতী এবং নেশাখোরদের আড্ডাক্ষেত্র হয়ে ওঠে, চারপাশে ছড়ানো মদের বোতল, সিরিঞ্জ দেখেই বিষয়টি স্পষ্ট হয় প্রতিনিধি দলের কাছে। তাঁরা দেখেন, অধিকাংশ স্কুলগুলির গেট খোলা। কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নিগম প্রতিভা শাহ শিক্ষা বিদ্যালয়ের। স্কুলে ঢুকতেই প্রতিনিধি দলটির চোখে পড়ে সিগারেটের বাক্স, গুটখার মোড়ক, মদের ভাঙা বোতল এবং ব্যবহৃত সিরিঞ্জ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে।
শুধু তাই-ই নয়, স্কুলগুলিতে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই। শৌচাগারগুলির ভয়ানক অবস্থা। খুবই নোংরা। দুর্গন্ধ। কোনও স্কুলে আবার শৌচাগারের জল উপচে স্কুল চত্বরে এসে পড়ছে। শৌচাগারগুলির কোনওটার দরজা আছে, কোনওটার নেই। যেগুলির আছে সেগুলি আবার নিরাপদ নয়। দক্ষিণ দিল্লি নগর নিগম প্রাথমিক শাহ বাল বালিকা বিদ্যালয়ে আবার শৌচাগারগুলির এমন অবস্থা যে ছাত্রীদের বাইরে শৌচকর্ম করতে হয়। কোনও স্কুলে আবার পড়ুয়াদের মিড ডে মিলও দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ এসেছে কমিশনের কাছে। দক্ষিণ দিল্লি নগর নিগম প্রাথমিক শাহ বাল বালিকা বিদ্যালয়ে কমিশনের প্রতিনিধিরা গিয়ে দেখেন স্কুলের সময় পেরিয়ে গেলেও শিক্ষকরা হাজির হননি। ক্লাসে যত সংখ্যক পড়ুয়া থাকা দরকার, তার তুলনায় বেশি রয়েছে কোনও কোনও স্কুলে।
সামগ্রিক ভাবে, চারটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে যে ভয়ানক অভিজ্ঞতা হয়েছে কমিশনের সে প্রসঙ্গে কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল বলেন, “ভেবেই শিউরে উঠছি যে, পুরনিগম পরিচালিত স্কুলগুলির কী ভয়াবহ পরিস্থি্তি। স্কুলগুলি যেন আতঙ্কের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে, যেখানে পড়ুয়া, শিক্ষক কেউই সুরক্ষিত নন।” এর পরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “স্কুলগুলিতে কয়েকশো পড়ুয়া। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য কোনও সিসিটিভি নেই? শুধু তাই-ই নয়, কী ভাবে কোনও একটি ভবনকে বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করে শুধু বোর্ড টাঙিয়ে পড়ুয়াদের সতর্ক করে দায় সারছে পুরনিগম? ওই ভবন সারানোর দায় কার?” একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে একটি স্কুলের ছাত্রীদের শৌচকর্মের জন্য বাইরে যেতে হচ্ছে? এটা ভাবতেও অবাক লাগছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy