অসুস্থ মাকে রাখবেন বলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন সুরজিৎ। এমনকি, ঘরে লাগিয়েছিলেন সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রতীকী ছবি।
শাশুড়ি এবং পুত্রবধূর সম্পর্ক ভাল ছিল না বহু বছর ধরেই। শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধা শাশুড়িকে পিটিয়ে খুন করে ফেলেন পুত্রবধূ। দক্ষিণ দিল্লির নেব সরাই এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। মৃতার নাম হাসি সোম (৮৬)। ৪৮ বছর বয়সি অভিযুক্তের নাম শর্মিষ্ঠা সোম। মঙ্গলবার খুনের অভিযোগে শর্মিষ্ঠাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়িতে কাজকর্ম করতেন না, এমনকি রান্নার কাজেও হাত লাগাতেন না, এই অভিযোগে হাসির উপর বহু দিন ধরেই রেগে ছিলেন শর্মিষ্ঠা। এই কারণেই শাশুড়ি এবং পুত্রবধূর মধ্যে অশান্তি লাগে।
পুলিশের দাবি, রান্নাঘরের বাসন দিয়েই হাসিকে পিটিয়ে খুন করেন শর্মিষ্ঠা। দিল্লি পুলিশ জানায়, ২৮ এপ্রিল এক ব্যক্তি পুলিশকে খবর দেন যে, তাঁর বন্ধুর মাকে বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। পৌঁছনোর পর হাসিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, স্বামী সুরজিৎ এবং ১৬ বছর বয়সি কন্যাকে নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে দিল্লিতে রয়েছেন শর্মিষ্ঠা। সুরজিতের মা হাসি থাকতেন কলকাতাতেই। ২০২২ সালে আর্থারাইটিসের সমস্যা দেখা দেওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন হাসি।
কলকাতায় অসুস্থ মাকে একা রাখতে চাইছিলেন না বলে হাসিকে দিল্লিতে নিয়ে আসেন সুরজিৎ। ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে দিল্লিতে থাকা শুরু করেন হাসি। কিন্তু অক্টোবর মাস নাগাদ বাথরুমে পড়ে গিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন হাসি। তার পর হাসিকে উল্টো দিকের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান সুরজিৎ। সুরজিৎ জানান, মা থাকবেন বলে সেই ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। হাসির ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরাও লাগিয়েছিলেন তিনি। সুরজিৎ এবং তাঁর কন্যা জানান যে, হাসির সঙ্গে শর্মিষ্ঠার সম্পর্ক ভাল ছিল না। হাসিকে কখনওই পছন্দ করতেন না শর্মিষ্ঠা। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে, ২৩ এপ্রিল একটি বাসন নিয়ে হাসির ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন শর্মিষ্ঠা।
দুই পক্ষের অশান্তির পর হাসির মাথায় বাসন দিয়েই মারতে শুরু করেন শর্মিষ্ঠা। সিসিটিভি ফুটেজে পুলিশ দেখে, ফ্ল্যাট থেকে হাতের বাসনটি পরিষ্কার করতে করতে বেরিয়ে যান শর্মিষ্ঠা। হাসির ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে সেই চাবি নিজের ঘরে নিয়ে চলে যান তিনি। ঘটনার দিন ফ্ল্যাটে শর্মিষ্ঠা এবং হাসি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানানো হয়, ভারী বাসন দিয়ে বার বার আঘাত করার ফলে মারা যান হাসি। মঙ্গলবার ৩০২ ধারা অনুযায়ী খুনের অভিযোগে শর্মিষ্ঠাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy