দিল্লির অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ দূষণ। শীতের আগে থেকেই দূষণের মাত্রা হু হু করে বাড়তে থাকে। সেই দূষণ রুখতে অতীতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে দিল্লি সরকার। কিন্তু কোনও ভাবেই রাজধানীর দূষণ-চিত্র বদলায়নি। অরবিন্দ কেজরীওয়াল এক সময় দূষণ আটকাতে দিল্লিতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। চালু করেন ‘জোড়-বিজোড়’ নীতি। এ বার দিল্লির নতুন বিজেপি সরকার দূষণ নিয়ন্ত্রণে কিছু পদক্ষেপ করল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ১৫ বছরের পুরনো যান বাতিল করা! শুধু তা-ই নয়, দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী মনজিন্দর সিংহ সিরসা ঘোষণা করেন, যদি কোনও যানবাহন ১৫ বছর বা তার বেশি পুরনো হয় তবে তাতে জ্বালানি (পেট্রল-ডিজেল) দেওয়া হবে না।
রাজধানীর বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কী কী করণীয়, তা নির্ধারণ করতেই শনিবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মনজিন্দর। সেই বৈঠকেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান পরিবেশমন্ত্রী। পুরনো যানবাহনের উপর বিধিনিষেধ, বৈদ্যুতিন যান ব্যবহারে জোর দেওয়ার মতো বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা রাজধানীর পেট্রল পাম্পগুলিকে নির্দেশিকা দিচ্ছি। তারাই ১৫ বছরের পুরনো যান শনাক্ত করবে। সেই সব গাড়িতে জ্বালানি সরবারহ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হবে বলেও জানান মনজিন্দর। আগামী ১ এপ্রিল থেকে নতুন নীতি কার্যকর হবে দিল্লিতে।
আরও পড়ুন:
পুরনো যানবাহনে জ্বালানি সরবরাহ সীমিত করার পাশাপাশি পরিবেশমন্ত্রী জানান, দিল্লির সব বহুতল, হোটেল এবং বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ‘অ্যান্টি স্মগ গান’ রাখতে হবে। মনজিন্দর আরও জানান, দিল্লির প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি সিএনজি বাস চলতি বছরের ডিসেম্বরের পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া হবে। বৃদ্ধি করা হবে বৈদ্যুতিন বাসের সংখ্যা।
সদ্য সমাপ্ত দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বিরোধীরা প্রায়ই তৎকালীন আপ সরকারকে ‘দূষণ’ নিয়ে খোঁচা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, দূষণ রোধে কেজরীওয়ালের সরকার কোনও কাজ করেননি। শুধু বায়ু দূষণ নয়, যমুনা নদী দূষণ রোধেও ব্যর্থ আপ সরকার। নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি প্রথম থেকেই দাবি করে, তারা ক্ষমতায় এলে দূষণরোধে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করবে। সেই মতোই নয়া নীতির ঘোষণা করল দিল্লি সরকার।