নিধির অভিযোগ ওড়ালেন অঞ্জলির মা। ছবি সংগৃহীত।
বর্ষবরণের রাতে ২০ বছরের তরুণী অঞ্জলি সিংহের দেহ গাড়ির তলায় আটকে ১৩ কিলোমিটার টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এখনও ভয় ধরাচ্ছে দিল্লিবাসীকে। এ বার এই ঘটনায় বিতর্কের নয়া উপাদান যুক্ত হল। ওই রাতে অঞ্জলির সঙ্গে থাকা তাঁর বন্ধু নিধি দাবি করেছিলেন যে, অঞ্জলি মত্ত হয়ে স্কুটি চালাচ্ছিলেন। এ বার তাঁর এই দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিলেন অঞ্জলির মা। তাঁর অভিযোগ, নিধি মিথ্যা কথা বলছে। তাঁর মেয়েকে খুনের চক্রান্তে সে-ও শামিল ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।
সম্প্রতি নিধি দাবি করেন, বর্ষবরণের রাতে অঞ্জলি মত্ত হয়ে স্কুটি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু অঞ্জলির পারিবারিক চিকিৎসক জানান, তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মদ খাওয়ার সপক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অঞ্জলির মায়েরও দাবি, তিনি তাঁর মেয়েকে কোনও দিন মদ খেয়ে বাড়ি আসতে দেখেননি। উল্টে নিধির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। নিধিকে তিনি চেনেন না, এমনটা দাবি করে তাঁর প্রশ্ন, “ও (নিধি) যদি বন্ধু হয়েই থাকবে, তবে বিপদের সময় বন্ধুকে ছেড়ে চলে এল কেন?”
মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের একটি বোর্ড অঞ্জলির দেহের ময়নাতদন্ত করার পর মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পুলিশের কাছে জমা করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, অঞ্জলির মাথার ঘিলু ছিল না। খুলিগহ্বরও খুলে গেছিল। শিরদাঁড়ার বেশ কয়েকটি জায়গা ভেঙে গিয়েছিল বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর। অঞ্জলির দেহের পাঁজরগুলি বুকের পিছন দিক দিয়ে উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই রিপোর্টেও অঞ্জলির শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতি নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নিধির দাবি ঘিরে শুরু হয়েছে নয়া জল্পনা। অঞ্জলির মা ঘাতক গাড়িতে সওয়ার ৫ জনের শাস্তি এবং নিধিকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তুলেছেন।
নিধি দাবি করেন, ‘‘অঞ্জলি মদ খেয়েছিল। তার পর স্কুটি চালাবে বলে জেদ করেছিল। আমি বারণ করি। তখনই আমাদের সামান্য মারপিট হয়। ও নিজের হুঁশে ছিল না তখন। ওই দুর্ঘটনার আগে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগতে লাগতে বেঁচে যায় আমাদের স্কুটি। আমি পিছন থেকেই ঝুঁকে পড়ে ব্রেক কষি। এর ফলে সে যাত্রায় বেঁচে যাই।’’ নিধির এই দাবি ঘিরেই প্রশ্ন তুলেছে অঞ্জলির পরিবার।
অঞ্জলির মৃত্যুর ৩ দিন পর তাঁর বান্ধবী নিধি সংবাদমাধ্যমে বলেন, “গাড়িটা ধাক্কা মারতেই আমি এক দিকে ছিটকে পড়ে যাই। আর গাড়ির সামনে পড়ে যায় অঞ্জলি। ও গাড়ির নীচে আটকে গিয়েছিল। আরোহীরা বুঝতে পেরেছিল যে, গাড়ির নীচে কেউ আটকে রয়েছে। ওরা তার পরেও ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার বন্ধুর উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়। অঞ্জলি চিৎকার করছিল। এই দৃশ্য দেখে আমি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে ওখান থেকে চলে গিয়েছিলাম। ভয় পেয়ে বাড়িতে গিয়ে কাউকে কিছু বলিনি। শুধু কাঁদছিলাম।”
নিধির দাবি, গাড়ির চাকার নীচে এক জন চাপা পড়েছে বুঝেও গাড়িটিকে ঘাতকেরা গাড়িটি এক বার সামনে নিয়ে যান, এক বার পিছনের দিকে। অঞ্জলি গাড়ির নীচে উপুড় হয়ে পড়েছিলেন। ওঁর পা আটকে গিয়েছিল। বার কয়েক গাড়িটিকে সামনে-পিছনে করার সময় চাকার তলায় আটকে থাকা অঞ্জলি যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলেন। তা সত্ত্বেও গাড়িটি থামাননি বলে জানান নিধি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অঞ্জলির মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy