টানা আট দিন ধরে দিল্লির বাতাসের গুণগত মানের সূচক (একিউআই) ‘অতি ভয়ানক’ পর্যায়ে থাকার পর গত দু’দিন ধরে পরিস্থিতি কিছুটা শুধরে ‘খারাপ’ পর্যায়ে উঠে এসেছিল। কিন্তু শনিবারই পরিস্থিতি আবার বদলে গিয়েছে। বাতাসের গুণগত মানের সূচক আবার ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে এখনই যে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলছে না, সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহবিদেরা।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (সিপিসিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের গুণগত মানের সূচক যদি শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে তা হলে তা ‘ভাল’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। ৫১-১০০ সন্তোষজনক, ১০১-২০০ সামান্য খারাপ, ২০১-৩০০ খারাপ, ৩০১-৪০০ খুব খারাপ, ৪০১-৫০০ অতি ভয়ানক। সিপিসিবি-র তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাজধানীর ৩৯টি দূষণ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ২৮টির রিপোর্ট বলছে, ওই কেন্দ্রগুলির আশপাশের এলাকায় বাতাসের গুণগত মানের সূচক ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বাকি ১১টি কেন্দ্রে বাতাসের গুণগত মানের সূচক ৪০০-র নীচে। অর্থাৎ ‘খুব খারাপ’।
সিপিসিবি-র তথ্য বলছে, শনিবার সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ওয়াজ়িরপুরের। তার পর জাহাঙ্গিরপুরী, আলিপুর, আনন্দ বিহার, চাঁদনি চওক। তবে কিছুটা শুধরেছে বিমানবন্দর, আইটিও, লোঢী রোডের মতো কয়েকটি জায়গার বাতাস। দূষণ তো আছেই, তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে ধোঁয়াশাও। গত এক সপ্তাহেরও বেশ সময় ধরে রাজধানীর সকাল ধোঁয়াশায় মোড়া থাকছে। শনিবারও তার অন্যথা হয়নি। দৃশ্যমানতা নেমে যাওয়ায় সড়ক, বিমান এবং রেল পরিষেবাও মাঝেমধ্যে ব্যাহত হচ্ছে। দিল্লি থেকে দূরপাল্লার ট্রেনগুলি দেরিতে ছাড়ছে। দিল্লিগামী ট্রেনগুলিও দেরিতে ঢুকছে।
আরও পড়ুন:
শুক্রবার দিল্লি সরকারকে দূষণ নিয়ে আবার সতর্ক করেছে সুপ্রিম কোর্ট। গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৪ (গ্র্যাপ) চালু করার পরেও রাজধানীতে ভিন্রাজ্য থেকে কী ভাবে ট্রাক ঢুকছে, তা বন্ধ করতে কেন ব্যবস্থা বা নজরদারি চালানো হচ্ছে না, তা নিয়ে দিল্লির সরকারকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেছে।
গত সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আদালতকে না জানিয়ে চতুর্থ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করা যাবে না। শুক্রবার বিচারপতি জানালেন, এই নিয়ে সোমবার সিদ্ধান্ত নেবে শীর্ষ আদালত। একিউআই ৪৫০ ছাড়ালে গ্র্যাপ-৪ চালু করা হয়। যে সব গাড়ির নম্বর অন্য রাজ্যের, সেগুলি দিল্লির রাস্তায় চলতে পারে না। ব্যাটারিচালিত গাড়ির ক্ষেত্রে সেই নিষেধাজ্ঞা নেই। এই পরিকল্পনা চালু হলে হাই স্কুল বন্ধ করে অনলাইন ক্লাস চালু করা হয়।