অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। —ফাইল ছবি।
২০১৮ সালে ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় উজানি অসমের ধলা এলাকায় পাঁচ বাঙালি মৎস্যজীবীকে হত্যা করেছিল আলফা। ঘটনার পরে ছ’বছর পার হলেও পরিবারগুলি ন্যায় পেল না। তাই নিহতদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা, জঙ্গিদের উদ্দেশে প্রতিবাদ ও সরকারি অবহেলার নিন্দায় শুক্রবার গুয়াহাটির লাল গণেশে, নেতাজি মূর্তির পাদদেশে সমবেত হলেন নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটি (সিআরপিসি)-র সদস্যেরা। সংগঠনের রাজ্য সহ-সভাপতি অভিজিৎ মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বাঙালিপ্রেমের কথা বলেন। বাঙালির ভোটেই এই সরকার ক্ষমতা ধরে রেখেছে। কিন্তু সেই বাঙালি বলেই ধলায় নিহতদের পরিবারগুলিকে সরকার কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়নি, যা জঙ্গি হানায় মৃত্যু হলে পাওয়ার কথা।”
নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির অপর এক সভায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যেখানে অসমে এখনও পর্যন্ত ভূমিপুত্রের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়নি, এনআরসি আইনি স্বীকৃতি পায়নি, সেখানে অসম চুক্তির ষষ্ঠ দফা অনুযায়ী অসমিয়া ভূমিপুত্রদের অধিকার রক্ষায় বিপ্লব শর্মা কমিটির ৫২টি সুপারিশ কী ভাবে রূপায়ণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার? আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরীর মতে, অসমের ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সমস্যা জটিল, পরিস্থিতিও ভয়ঙ্কর। তাঁর কথায়, “বিজেপি নাগরিকত্বের ভিত্তিবর্ষ পিছিয়ে ১৯৫১ সাল করার চেষ্টা চালালেও ১৭ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট অসম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকেই ভিত্তিবর্ষ বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও সরকার বিভিন্ন উপায়ে জটিলতা তৈরি করতে চাইছে।” সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সারা অসম বাঙালি যুবছাত্র ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সহদেব দাস। তিনি বলেন, “অসমে ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় দু’কোটি মানুষ রয়েছেন। এঁদের দাবিয়ে রেখে ক্ষমতা ভোগ করার উদ্দেশ্যেই বর্তমান সরকার ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ করতে চাইছে।” সিআরপিসি-র সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন পালের অভিযোগ, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমম্তবিশ্ব শর্মা বার বার ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আসা হিন্দু বাঙালিদের অসমে উদ্বাস্তু প্রমাণ করতে চাইছেন। কিন্তু এর পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর। প্রায় সত্তর লক্ষ হিন্দু বাঙালি নাগরিকত্ব হারাবেন।
গৌহাটি হাই কোর্টের আইনজীবী সুভাষ বিশ্বাসের দাবি, সিএএ নিছকই এক রাজনৈতিক চমক। তাঁর বক্তব্য, “সারা ভারতে একশো জন মানুষও এই আইনে নাগরিকত্ব পাননি। রাজনৈতিক দলগুলি তাদের ফায়দার জন্য বিষয়টিকে জিইয়ে রেখেছে।” আইনজীবী নজরুল হক মাঝারভুঁঞা বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পরে বিপ্লব কুমার শর্মা কমিটির পরামর্শের কোনও আইনগত স্বীকৃতি থাকল না। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ওই রিপোর্টকে হাতিয়ার করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার হরণ করতে উদ্যত হয়েছেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, কেন্দ্রের গড়ে দেওয়া ওই কমিটির সুপারিশ এখনও কেন্দ্র গ্রহণ বা অনুমোদনই করেনি।” সভায় হাই কোর্টের তিন জন আইনজীবীকে নিয়ে এই বিষয়ে লড়ার জন্য একটি লিগাল সেল গঠন করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy