চলতি মাসের শেষেই শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। চলছে চারধাম যাত্রাও। এখনই সতর্ক না হলে এই ধরনের তীর্থযাত্রার সময়ে হওয়া ভিড়ের কারণে দেশে কোভিড সংক্রমণ লাফ দিয়ে বাড়তে পারে বলে আজ রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে সতর্ক করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। গত এক সপ্তাহ ধরে দেশে ধারাবাহিক সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে দীর্ঘ কয়েক মাসের বিরতির পরে আজ রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজেশ। সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কায় সমস্ত রাজ্যের কোভিড শয্যাসংখ্যা কত রয়েছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে অক্সিজেন জোগানোর প্রশ্নে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো সঠিক ভাবে কাজ করছে কি না তাও আজকের বৈঠকে রাজ্যগুলিকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৪টি রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা।

বৈঠকে মূলত চারটি বিষয়ের উপরে জোর দেন স্বাস্থ্যকর্তারা। প্রথমত, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা জারি রাখা। দ্বিতীয়ত, জনসাধারণের উপরে নিরন্তর নজরদারি। তৃতীয়ত, বিভিন্ন হাসপাতাল ও পরীক্ষাগারগুলির উপরে নজরদারি। চতুর্থত, আক্রান্তদের মধ্যে যত সম্ভব ব্যক্তির জিনোম পরীক্ষা করা। একইসঙ্গে শ্বাসকষ্টজনিত বা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ নিয়ে যাঁরা ভুগছেন তাঁদের উপরেও কড়া নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। বিশেষ কোনও এলাকায় সংক্রমণের বেশি ঘটনা ঘটছে কি না সে দিকেও খেয়াল রাখতে বলেছে কেন্দ্র। এ ছাড়া জোর দিতে বলা হয়েছে দ্বিতীয় দফায় ঘরে ঘরে গিয়ে টিকাকরণে। বুস্টার ডোজ় নেওয়ার গতি বাড়াতে প্রচারও চায় কেন্দ্র। যে সব রাজ্যগুলিতে সংক্রমণের হার এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সে রাজ্যগুলিতে বুস্টার ডোজ় অভিযানের গতি বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা।

তবে এই মুহূর্তে কেন্দ্রকে বেশি চিন্তায় রেখেছে আসন্ন অমরনাথ যাত্রা বা চলতে থাকা চারধাম যাত্রার মতো ধর্মীয় জমায়েতগুলি। কেন্দ্রীয় এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘গোটা দেশ থেকে লক্ষ-লক্ষ লোকের আগমন হয় ছোট্ট একটি ভৌগোলিক এলাকায়। আগতদের মধ্যে সংক্রমিত রোগী থাকলে সংক্রমণ ছড়ানোর পূর্ণ আশঙ্কা রয়েছে।’’ সে কারণে দ্বিতীয় ডোজ়ের পরে বুস্টার ডোজ় নেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে এমন তীর্থযাত্রীদেরা যাতে সেই ডোজ় নেন সে দিকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। কেবল উপসর্গহীন ব্যক্তিকেই তীর্থযাত্রার অনুমতি দেওয়া হবে, এমন প্রচারের উপরেও জোর দিয়েছে কেন্দ্র। তীর্থযাত্রীদের জমায়েত যতটা সম্ভব বড় জায়গায় যাতে করা হয় সেই সুপারিশও করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বয়স্ক মানুষ যাঁরা বিভিন্ন রোগে দীর্ঘদিন ধরে আক্রান্ত তাঁদের চিকিৎসকের সবুজ সঙ্কেত নিয়ে তবে পথে নামার সুপারিশ করেছে কেন্দ্র। কোনও রোগীকে যাতে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় সে দিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।