ছবি: পিটিআই।
সেপ্টেম্বর থেকে রোজ দেশের এক কোটি মানুষকে করোনার টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে চলতি মাসে ২০ কোটি ও সেপ্টেম্বরে ২৫-৩০ কোটি টিকা রাজ্যগুলিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের দাবি, ওই হারে টিকাকরণ হলে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।
আজ দেশে সারা দিনে ৫০.২৯ লক্ষ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, মাত্র এক মাসের মধ্যে দৈনিক টিকাকরণ কী ভাবে দ্বিগুণ করবে সরকার, বিশেষত যেখানে টিকার উৎপাদন সীমিত? স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের দাবি, সিরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড প্রতিষেধক স্বাভাবিক হারে উৎপাদিত হচ্ছে। ভারত বায়োটেকের প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন উৎপাদনে সাময়িক কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই সমস্যা কাটিয়ে চলতি মাস থেকেই কোভ্যাক্সিনের জোগান বাড়তে চলেছে। এ ছাড়া আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ভারতীয় বাজারে জ়াইডাস ক্যাডিলা, বায়োলজিক্যাল-ই, নোভাভ্যাক্স, জেনোভা— এই চার সংস্থার প্রতিষেধক আসতে চলেছে। ফলে বাজারের সাময়িক ঘাটতি মিটিয়ে টিকাকরণের হার বাড়ানো সম্ভব হবে।
টিকার জোগান বাড়াতে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের অব্যবহৃত টিকা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্য ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে প্রায় ৫.১০ কোটি টিকার বাক্স এখনও পড়ে রয়েছে। শুধু মহারাষ্ট্রে প্রায় ৯০ লক্ষ টিকা ব্যবহার হয়নি। ওই রাজ্যে বেসরকারি হাসপাতালের হাতে রয়েছে ৪৯ লক্ষ টিকা। পশ্চিমবঙ্গে সব মিলিয়ে অব্যবহৃত রয়েছে ৫৪ লক্ষ প্রতিষেধক— ২৬ লক্ষ সরকারের হাতে, প্রায় ২৮ লক্ষ রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলির হাতে।
গত মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া সংসদে জানান, প্রতিষেধক সংস্থাগুলিকে তাদের উৎপাদিত টিকার ২৫ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে দেওয়ার যে বাধ্যতামূলক শর্ত কেন্দ্র দিয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ বেসরকারি হাসপাতালে বেশি দাম দিয়ে প্রতিষেধক নিতে মানুষ বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। বরং ভিড় জমছে সরকারি কেন্দ্রে। তাই বেসরকারি হাসপাতালে পড়ে থাকা টিকা সংশ্লিষ্ট রাজ্যকেই দেওয়া হবে।
কেন্দ্র আশাবাদী, আগামী ১৫ অগস্টের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভ্যাক্সিনকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিয়ে দেবে। সে ক্ষেত্রে ওই প্রতিষেধক নিয়ে বিদেশে যাওয়ার কোনও সমস্যা থাকবে না। তবে শুধু কোভ্যাক্সিন নয়, কোভিশিল্ড নিয়েও অনেক দেশে গেলে এখনও ১০-১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকতে হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিভৃতবাসের খরচ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই মেটাতে হচ্ছে। পড়ুয়াদের জন্য সেই খরচ অনেকটাই বেশি। বিদেশে গিয়ে এই সমস্যায় পড়া পড়ুয়াদের জন্য একটি তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। সংস্থার সিইও আদার পুনাওয়ালা আজ টুইটারে লেখেন, ‘‘কিছু দেশ এখনও কোভিশিল্ডকে ছাড়পত্র দেয়নি। সেই কারণে বিদেশে পড়তে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সে সব দেশে গিয়ে নিভৃতবাসে থাকতে হচ্ছে। সেই খরচ মেটাতে যাঁদের আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন, তাঁদের জন্য ১০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে সংস্থা।’’ ইউরোপের অনেক দেশ কোভিশিল্ডকে ছাড়পত্র দিলেও আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশগুলি এখনও স্বীকৃতি দেয়নি সিরামের ওই প্রতিষেধককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy