Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় আচমকা ভারত সীমান্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের, আটকে বহু মানুষ

ভারতে আটকে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকরা দূতাবাস থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে সে দেশের সরকার। বহু ভারতীয়ও আটকে সেখানে।

ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন পেট্রাপোলে আটকে থাকা মানুষ।

ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন পেট্রাপোলে আটকে থাকা মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ১৮:১১
Share: Save:

কোভিড পরিস্থিতিতে সামাল দিতে পড়শি দেশ ভারতের সঙ্গে আগেভাগে টিকা চুক্তি সেরে রেখেছিল তারা। কিন্তু টিকা সরবরাহকারী সেই ভারতেই উত্তরোত্তর সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখান থেকে নিজেদের দেশে যাতে সংক্রমণের আমদানি না হয়, তার জন্য দু’সপ্তাহের জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ সরকার। ২৬ এপ্রিল থেকে আগামী ৯ মে পর্যন্ত সীমান্ত বন্ধ থাকছে। এই সময়ে বৈধ ভিসা-পাসপোর্ট নিয়েও সড়কপথে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকতে পারবেন না কেউ।

১৪ এপ্রিল থেকে এমনিতেই দু’দেশের মধ্যে উড়ান পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যেই ভারতে দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে ৩ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রবিবার সাময়িক ভাবে সীমান্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। তবে মানুষের প্রবেশ বন্ধ থাকলেও, আগের মতো ব্যবসা-বাণিজ্য বজায় থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে আটকে পড়েছেন যাঁরা, তাঁদের দেশে ফেরায় নিষেধাজ্ঞা নেই যদিও। এ দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে তবেই দেশে ফিরতে পারবেন তাঁরা।

বাংলাদেশ সরকারের এই ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন সে দেশ থেকে ভারতে আসা বহু মানুষ। সোমবার সকালে পেট্রোপোল সীমান্তে দেখা যায়, বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছেন সেখানে। আচমকা এই ঘোষণায় আটকে পড়েছেন তাঁরা। সীমান্ত বন্ধ করার আগে দু’দিন অন্তত সময় দেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য তাঁদের।

মেডিক্যাল ভিসা নিয়েও ভারতে এসেছিলেন বাংলাদেশের বহু মানুষ।

মেডিক্যাল ভিসা নিয়েও ভারতে এসেছিলেন বাংলাদেশের বহু মানুষ।

সীমান্তে থাকা মহম্মদ হাবিবুর রহমান নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক বলেন, ‘‘রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ আচমকাই খবর পেলাম সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকার নিশ্চয়ই জানে যে, দেশের বহু মানুষ মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছেন। দু’-তিন দিন অন্তত সময় দেওয়া উচিত ছিল। অথবা এক সপ্তাহের মধ্যে ফিরে যেতে হবে, এমন কোনও ঘোষণা করতে পারত সরকার। এখন এই অবস্থায় কী করব আমরা। বহু মানুষ অসুস্থ। তাঁরা কী করবেন? বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমরা যাঁরা আটকে রয়েছি, আগামী দু’দিনের মধ্যে অন্তত আমাদের ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।’’

একই অবস্থা সীমান্তের ওপারেও। ভারত থেকে বাংলাদেশ গিয়েও আটকে পড়েছেন বহু মানুষ। বেনেপোলে তাঁরা আটকে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই তাঁদের সীমান্তের কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছেন না। হরিদাসপুর জোনের মুখ্য অভিবাসন অফিসার তরুণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশনার থেকে এনওসি আনলে তবেই দেশে ফেরা যাবে। ভারত থেকেও অনেক মানুষ বাংলাদেশে আটকে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত তাঁদের নিয়ে কোনও নির্দেশ পায়নি সরকারের কাছ থেকে। তবে ভারতের তরফে ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে। এখনও পর্যন্ত কোনও জবাব মেলেনি।’’

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভারতে দৈনিক সংক্রমণ ইতিমধ্যেই যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে মৃত্যুও। সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৭ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬২৮ জনই সংক্রমিত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ১৫০ জন রোগীর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE