গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
৭২ জন মন্ত্রীর মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশের পরিবারিক রাজনৈতিক পরিচিতি রয়েছে। আর তা নিয়েই এ বার প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী খোঁচা দিলেন বিজেপিকে! রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের প্রবল সমালোচক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নয়া মন্ত্রিসভায় কেন পরিচিত নেতানেত্রীদের পুত্র, কন্যা, জামাতা, পুত্রবধূদের আধিক্য, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি।
এক্স হ্যান্ডলে মোদীর মন্ত্রিসভাকে ‘পরিবারমণ্ডল’ বলে খোঁচা দিয়ে রাহুল লিখেছেন, ‘‘যাঁরা প্রজন্মের সংগ্রাম, সেবা ও ত্যাগের ঐতিহ্যকে ‘পরিবারতন্ত্র’ বলে চিহ্নিত করেন তাঁরাই তাঁদের ‘সরকারি পরিবারমণ্ডলীতে’ ক্ষমতার ভাগাভাগি করছেন। নরেন্দ্র মোদীর কথা ও কাজের এটাই পার্থক্য!’’ এক্স হ্যান্ডলে মোদীর ২০ জন মন্ত্রীর ‘পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাসের’ একটি তালিকাও দিয়েছেন রাহুল। তাতে রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি শান্তনু ঠাকুরের নাম। তাঁর বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রাহুল।
যদিও বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের সাফাই, সেই তালিকার দিকে চোখ বোলালে স্পষ্ট হবে, ‘পরিবারতন্ত্রের প্রতিনিধি’ হিসাবে চিহ্নিত ওই মন্ত্রীদের কয়েক জন পূর্বতন ইউপিএ সরকারেরও মন্ত্রী ছিলেন। কংগ্রেসের সমর্থনে হয়েছিলেন বিভিন্ন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীও! রবিবার মোদী মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়াদের তালিকায় রয়েছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার পুত্র তথা জেডিএস নেতা কুমারস্বামী। যিনি একদা কংগ্রেসের সমর্থনে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাধবরাও শিন্ডের পুত্র জ্যোতিরাদিত্য, প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস সহ-সভাপতি জিতেন্দ্র প্রসাদের পুত্র জিতিন এবং হরিয়ানার প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাও বীরেন্দ্র সিংহের পুত্র ইন্দ্রজিৎ মন্ত্রী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সরকারে।
রাহুলের তালিকা জানাচ্ছে, মোদীর মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর বাবা রিঞ্চিন খুরু অরুণাচল প্রদেশের নেতা তথা বিধায়ক ছিলেন। মন্ত্রী রক্ষা খাড়সের শ্বশুর একনাথ মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন বিজেপি মন্ত্রী তথা বর্তমান এনসিপি নেতা। চিরাগ পাসোয়ানের বাবা প্রয়াত রামবিলাস ইউপিএ এবং এনডিএ দুই সরকারেই মন্ত্রী ছিলেন। রাজনীতির ‘যোগ’ রয়েছে বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নড্ডারও। তিনি মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামাই।
মোদীর মন্ত্রিসভায় ঠাই পাওয়া জয়ন্ত চৌধরির পিতামহ চরণ সিংহ কংগ্রেসের সমর্থনের দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। জয়ন্তের প্রয়াত পিতা অজিত সিংহ মন্ত্রী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওয়ের সরকারে। মোদীর সরকারে জেডিইউ-র প্রতিনিধি রামনাথ ঠাকুরের বাবা প্রয়াত কর্পুরী ঠাকুর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। পীযূষ গয়ালের বাবা বেদপ্রকাশ এবং ধর্মেন্দ্র প্রধানের বাবা দেবেন্দ্রও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ কীর্তি বর্ধন সিংহের বাবা আনন্দ সিংহ উত্তরপ্রদেশ সরকারের এবং বীরেন্দ্র কুমার খটিকের বাবা গৌরীশঙ্কর মধ্যপ্রদেশ সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী। সপ্তদশ লোকসভার কংগ্রেস সাংসদ অধুনা মোদীর মন্ত্রী রভনীত সিংহ বিট্টুর পিতামহ বিয়ন্ত সিংহ ছিলেন পঞ্জাবের প্রাক্তন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়খণ্ড থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়া অন্নপুর্ণা দেবীর স্বামী রমেশপ্রসাদ যাদব একদা আরজেডি বিধায়ক ছিলেন। আপনা দল (এস) নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেলের বাবা প্রয়াত সোনেলাল পটেল ছিলেন উত্তরপ্রদেশের কুর্মি সমাজের নেতা তথা ওই দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy