Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Kailash Vijayvargiya

মুখ্যমন্ত্রী হতে চান কৈলাস, শিবের ভরসা নারীশক্তি

একাধিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হলেও, তাতে স্থান পাননি মধ্যপ্রদেশের দু’দশক ধরে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ফলে তিনি যে বেশ মর্মাহত, তা স্বীকার করে নিচ্ছে শিবরাজের ঘনিষ্ঠ মহল।

An image of Kailash Vijayvargiya

কৈলাস বিজয়বর্গীয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৩৯
Share: Save:

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে হবেন, তা ঘিরে দ্বৈরথের আভাস দলের মধ্যে। লড়াইয়ে রয়েছেন সাত জন সাংসদ, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। কিন্তু কারও নাম স্পষ্ট ভাবে ঘোষণা না হওয়ায়, তাতে খোলাখুলি ভাবে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার কৈলাস ও শিবরাজ।

প্রথমে কৈলাস জানিয়েছিলেন তিনি বিধানসভা নির্বাচন লড়তে চান না। কিন্তু নাম ঘোষণার দু’সপ্তাহের মাথায় বিজেপি নেতা তিনি জানাচ্ছেন, শুধু বিধায়ক হওয়ার জন্য নয়, আরও বড় কিছু প্রাপ্তির আশাতেই তিনি নির্বাচনী যুদ্ধে নামছেন। খোদ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে সেই ভরসা দিয়েছেন। কী সেই আশ্বাস তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু না বললেও, কৈলাস-ঘনিষ্ঠ শিবির বলছে, ইন্দোরের প্রাক্তন মেয়র এ যাত্রায় যখন লড়াইয়ে নেমেছেন, তখন মুখ্যমন্ত্রিত্বের কুর্সিকেই পাখির চোখ করেছেন। তাঁর লক্ষ্য হতে চলেছে, ভোপাল নয়, ইন্দোরকেই মধ্যপ্রদেশের দ্বিতীয় রাজধানীতে পরিণত করা। সেই কারণে ইন্দোর-সহ সংলগ্ন এলাকার সবক’টি বিধানসভার আসন নিরঙ্কুশ ভাবে জেতার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন তিনি।

দলের মধ্যে নিজের প্রভাব বাড়াতে কৈলাস গতকাল ঘোষণা করেন, তাঁর কেন্দ্রে যদি কোনও বুথে কংগ্রেস একটিও ভোট না পায়, সেই বুথ অধ্যক্ষকে তিনি ৫১ হাজার টাকা দিয়ে পুরস্কৃত করবেন। যা শুনে অনেকেই মনে করছেন, কৈলাসের লক্ষ্য হল নিজে রেকর্ড মার্জিনে জিতে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার হওয়া।

অন্য দিকে, একাধিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হলেও, তাতে স্থান পাননি মধ্যপ্রদেশের দু’দশক ধরে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ফলে তিনি যে বেশ মর্মাহত, তা স্বীকার করে নিচ্ছে শিবরাজের ঘনিষ্ঠ মহল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর অভিমানী শিবরাজ তাই তাঁর মুখ্যমন্ত্রী থাকা উচিত কি না তা নিয়ে নিজেই প্রশ্ন করেছেন রাজ্যবাসীকে। গতকাল ডিন্দোরির এক জনসভায় জনতার কাছে শিবরাজ জানতে চান, তিনি উত্তম প্রশাসক হিসাবে সরকার চালাচ্ছেন কি না? জনতা ‘হ্যাঁ’ বলতেই, দ্বিতীয় প্রশ্নে শিবরাজ জানতে চান, আগামী নির্বাচনে ‘মামা’র (রাজ্যে শিবরাজকে ওই নামেই ডাকা হয়) মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত কি না? তাতেও ইতিবাচক সমর্থন দেয় জনতা।

রাজ্যের কংগ্রেস নেতা কমল নাথের কটাক্ষ, ‘‘মধ্যপ্রদেশে বিজেপির হতাশা চরমে পৌঁছেছে। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শিবরাজের নাম নেওয়া বন্ধ করে তাঁকে দৌড় থেকে বার করে দেন। যিনি টিকিটের দৌড় থেকে বাইরে, সেই ব্যক্তি সবার সঙ্গে লড়তে প্রস্তুত।’’

স্বভাবতই শিবরাজ যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিজের নাম প্রস্তাব করছেন, তা ভাল ভাবে নিচ্ছেন না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মধ্যপ্রদেশে এমনিতেই সরকার ধরে রাখা বেশ কঠিন বলে জানে দল, তার মধ্যে মহিলা মহলে শিবরাজের জনপ্রিয়তা চিন্তায় রেখেছে তাদের। সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে ভোটের আগে মেয়েদের ক্ষমতায়নের প্রশ্নেও তৎপর হয়ে উঠেছে শিবরাজ সরকার। চলতি সপ্তাহে সরকারি চাকরিতে মহিলাদের ৩৫ শতাংশ সংরক্ষণের কথা ঘোষণা করেছেন শিবারজ।

আগামী সপ্তাহে ভোটের দিন ঘোষণা হলে, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাবে। তাই নির্দিষ্ট দিনের অন্তত ছয় দিন আগেই ‘লাডলি বহেন যোজনা’র টাকা উপভোক্তা মহিলাদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন শিবরাজ। এ সব কাজকে সামনে রেখেই শিবরাজ শিবির ‘মহিলা স্বশক্তিকরণ কা আওয়াজ হু, ম্যয় শিবরাজ হু’-বলে আলাদা করে প্রচারে নেমেছে। যা আসলে রাজ্যে মেয়েদের কাছে শিবরাজের নিজস্ব ‘ব্র্যান্ড’ তৈরি করা। যে কাজে গত দু’দশক ধরে অনেকটাই সফল শিবরাজ। তাই শিবরাজকে ‘মুখ’ না করা হলে, তিনি যদি শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন, সে ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে মহিলা ভোটারদের মধ্যে। তা হলে লোকসভার আগে মধ্যপ্রদেশে সরকার ধরে রাখা যে কঠিন হতে পারে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Kailash Vijayvargiya Madhya Pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy